কাবুলের নতুন সরকারকে তাড়াহুড়ো করে স্বীকৃতি দেবে না ভারতঃ জয়শংকর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মস্কো, রাশিয়ায় তাদের আলোচনার পর একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। ৯ জুলাই ২০২১।

গত বছরে দোহায় তালিবানের (Taliban) সঙ্গে আমেরিকার কি চুক্তি হয়েছিল, তা ভারতকে বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে আফগানিস্তানে এখন যা ঘটছে, তার গভীর প্রভাব পড়বে বিশ্বের এই অঞ্চলে এবং তার বাইরেও। বৃহস্পতিবার এমনই মন্তব্য করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি জানান, আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কারণ দু'টি। প্রথমত, সেখানে সকলকে নিয়ে সরকার গঠিত হবে কিনা। দ্বিতীয়ত, আফগানিস্তানের মাটিকে জঙ্গীরা ব্যবহার করতে পারবে কিনা।

শুক্রবার, ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ প্রোগ্রামের শীর্ষ বৈঠকে বক্তব্য পেশ করেন জয়শংকর। তিনি বলেন, কাবুলে যে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, তাড়াহুড়ো করে তাকে স্বীকৃতি দেবে না ভারত। পরে বিদেশমন্ত্রী বলেন, কোয়াড গোষ্ঠী কোনও নির্দিষ্ট দেশের শত্রু নয়। ওই গোষ্ঠীতে আছে ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান।

জয়শংকর বলেন, আফগানিস্তানে যা ঘটেছে, তা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আফগানিস্তান আমাদের প্রতিবেশী দেশ। বিদেশমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, আফগানিস্তান নিয়ে আমেরিকার অবস্থানের সঙ্গে ভারতের মিল আছে কি? তিনি বলেন, আমরা উভয়েই একটি বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা লক্ষ্য রাখছি, আফগানিস্তানের মাটিতে জঙ্গিরা আশ্রয় পাচ্ছে কিনা। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ইস্যুটি তুলেছিলেন বলে বিদেশমন্ত্রী জানান।

জয়শংকরের কথায়, "কয়েকটি বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের অবস্থানের মিল আছে। আবার কোনও কোনও বিষয়ে দুই দেশের অবস্থান আলাদা। আমাদের অভিজ্ঞতা অনেক ক্ষেত্রে আমেরিকার চেয়ে আলাদা। আমরা এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছি।"

চীনের আগ্রাসী মনোভাব সম্পর্কে প্রশ্ন করলে বিদেশমন্ত্রী বলেন, "আমাদের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক যথেষ্ট গভীর। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে, তা আমাদের ভেবে স্থির করতে হবে।"

এর মধ্যে জানা যায়, বৃহস্পতিবার কাবুলে এক সেকেন্ডারি স্কুলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন ছ'জন মহিলা। তাঁরা দাবী জানাচ্ছিলেন, মেয়েদেরও স্কুলের উঁচু ক্লাসে পড়ার অধিকার দিতে হবে। গুলি চালিয়ে তাঁদের হটিয়ে দিয়েছে তালিবান রক্ষীরা।

বিক্ষোভের সময় মহিলারা একটি ব্যানার তুলে ধরেন। তাতে লেখা ছিল, 'আমাদের কলম ভেঙে ফেলবেন না। আমাদের বইগুলো পুড়িয়ে দেবেন না। আমাদের সামনে স্কুলের দরজা বন্ধ করে দেবেন না।' কিন্তু তালিবান রক্ষীরা ব্যানারটি মহিলাদের হাত থেকে কেড়ে নেয়। তারপর বিক্ষোভকারীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এক বিদেশি সাংবাদিক বিক্ষোভের ছবি তুলছিলেন। তাঁকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে মারা হয়।

বিক্ষোভকারীরা ছিলেন 'আফগান মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন' গোষ্ঠীর সদস্য। রক্ষীদের তাড়ায় তাঁরা আশ্রয় নেন স্কুলের ভেতরে। পরে রক্ষীরা বলে, আমাদের দেশেও বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার আছে। কিন্তু আগে আমাদের এব্যাপারে জানানো উচিত ছিল।