ধর্ষিতা মহিলা অফিসারের টু ফিঙ্গার টেস্টের অভিযোগ খারিজ করলেন ভারতের বিমানবাহিনী প্রধান

ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরি

মহিলা অফিসারের তোলা টু ফিঙ্গার টেস্টের অভিযোগ খারিজ করলেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরি। ২৮ বছরের অফিসার দাবী করেছিলেন, তাঁকে এক পুরুষ সহকর্মী ধর্ষণ করেছেন, ধর্ষণ প্রমাণে টু ফিঙ্গার টেস্ট করা হয়েছে, যা দেশে নিষিদ্ধ, এমনকী ধর্ষণ মামলায় তাঁকে তাঁর ‘যৌন সম্পর্কের ইতিহাস’ নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আজ এব্যাপারে সংবাদ সংস্থা পিটিআই বায়ুসেনা প্রধানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, কোনও টু ফিঙ্গার টেস্ট হয়নি। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা রক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহিলা অফিসারের অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, "এধরনের ঘটনায় বিমানবাহিনীর আইন খুবই কঠোর। মহিলা অফিসারের টু ফিঙ্গার টেস্ট করানোর ভুল খবর বেরিয়েছে। কোনও টু ফিঙ্গার টেস্টই হয়নি। আমরা নিয়মবিধির ব্যাপারে পুরোপুরি সচেতন। যাবতীয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

প্রসঙ্গত, মহিলা বিমানবাহিনী অফিসারের দায়ের করা মামলার তদন্ত ভার বিমানবাহিনীর হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত ২৯ বছর বয়সি ফ্লাইট লেফটেন্যান্টের বিচার হবে কোট মার্শাল আইনে, তা বৃহস্পতিবারই জানায় তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাত্তুরের আদালত। তাঁকে ইতিমধ্যে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশন জানিয়েছিল, মহিলা বিমানবাহিনী অফিসারের তোলা অভিযোগের ব্যাপারে তারা ভারতীয় বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা ভারতীয় বিমানবাহিনী ডাক্তারদের আচরণে অত্যন্ত হতাশ, ক্ষুব্ধ কেননা তাঁরা নির্যাতিতার টু ফিঙ্গার টেস্ট করিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন, নির্যাতিতার সম্মান, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারেও হস্তক্ষেপ করেছেন। কমিশন এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ট্রেনিং নিতে বিমানবাহিনীর কলেজে আসা ওই মহিলা অফিসার জানিয়েছিলেন, কোয়োম্বাত্তুরের রেডফিল্ডসে বিমানবাহিনীর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কলেজে তাঁর ঘরেই ধর্ষণ করা হয় তাঁকে। সেদিন তিনি খেলতে গিয়ে চোট পান। কিছু ওষুধপত্র খেয়ে নিজের ঘরে ঘুমোতে যান তিনি। ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পর তিনি আবিষ্কার করেন, তাঁকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে।

বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষের গৃহীত ব্যবস্থায় খুশি হতে না পেরেই তিনি বাধ্য হয়ে থানায় গিয়েছেন বলে জানান ওই মহিলা অফিসার। তাঁর দাবি, বিমানবাহিনীতে দুবার তাঁকে অভিযোগপত্র তুলে নিতে চাপ দিয়ে বাধ্য করা হয়। আরেকবার তাঁকে বয়ান বদল করা একটি চিঠিতে সই করতে বলা হয়, কিন্তু তিনি সম্মত হননি। এই মামলায় প্রাথমিক তদন্ত করে গাঁধীপুরম থানার মহিলা পুলিশ টিম। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ অনুচ্ছেদের আওতায় যৌন নিগ্রহের মামলা দায়ের করা হয়। ২০ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা বিমানবাহিনী অফিসার। ২৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।