মেক্সিকো ও কানাডার ওপর নতুন করে ২৫% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের উপস্থিতিতে শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র তার দুটি বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে আমদানির ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দাবি অনুসারে, প্রতিবেশি দেশগুলো অবৈধ অভিবাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদকের প্রবাহ হ্রাস করার প্রমাণ উপেক্ষা করে এই শুল্ক আরোপ করা হলো।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, তার দেশ "এই অন্যায্য সিদ্ধান্তকে বিনা উত্তরে ছেড়ে দেবে না।" তিনি ঘোষণা করেন, তিনি সাড়ে ১৫ হাজার কোটি ডলার মূল্যের আমেরিকান পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

ট্রুডো বলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত “অবিশ্বাস্যভাবে সফল একটি বাণিজ্য সম্পর্ককে ব্যাহত করবে”। এই শুল্কের ফলে আমেরিকানদের নিত্যপণ্য, পেট্রোল এবং গাড়ির মতো পণ্যগুলোর জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইন বাম ইঙ্গিত দেন, তার দেশও পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে। মেক্সিকোর অর্থনীতি বাণিজ্য নির্ভর; তাদের রপ্তানির ৮০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্র মঙ্গলবার চীনে পণ্যের উপরও নতুন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে ৪ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন, এখন সেটা দ্বিগুণ হলো। ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ফেন্টানল পাচারের উৎস হিসেবে চীনকে দায়ী করেছেন।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা দৃঢ়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে। চীন তার স্বার্থ রক্ষায় পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। চীন আরও বলেছে, এই শুল্ক বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্র-চীন অর্থনৈতিক সহযোগিতা হ্রাস পাবে।

ট্রাম্প বলেন, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর কর আরোপ করে তাদের ওপর ২ এপ্রিল থেকে পারস্পরিক শুল্ক কার্যকর হবে।

অনেক অর্থনীতিবিদ বারবার সতর্ক করেছেন, এই শুল্কের ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রে সমস্যাজনক মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি করতে পারে।

ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, আমেরিকানদের জন্য এটি স্বল্পমেয়াদে কষ্টকর হতে পারে। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছেন, এই শুল্ক শেষ পর্যন্ত আমেরিকার অর্থনীতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

ট্রাম্প বলেন, তিনি যে শুল্ক আরোপ করছেন তা বিদেশি কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের বিদেশি চালানের ওপর শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি বেশি উৎপাদন করতে উৎসাহিত করবে।

(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।)