অস্ত্রে ব্যবহারযোগ্য ইউরেনিয়াম উৎপাদনের একটি গোপন কেন্দ্রের এক ঝলক সকলের সামনে প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। এই দৃশ্য ও ঘটনা বিরল। সে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ মাধ্যম শুক্রবার জানিয়েছে, কিম জং উন ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা “চক্রবৃদ্ধি হারে” বৃদ্ধি করতে আরও জোরালো উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানটি উত্তর কোরিয়ার প্রধান ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক চত্বরে কিনা তা অস্পষ্ট, তবে ২০১০ সালে সফররত আমেরিকান গবেষকদের ইয়ংবিয়নে তারা একটি পারমাণবিক কেন্দ্র দেখিয়েছিল; তারপর এই প্রথম উত্তর কোরিয়া তাদের ইউরেনিয়ামের মান বৃদ্ধি করার জন্য নির্মিত একটি কেন্দ্রের বিষয়ে জানালো।
এই ভাবে গোপন ইউরেনিয়াম স্থাপনার কথা প্রকাশ করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের উপর যে আরও চাপ বৃদ্ধি করতে পারে উত্তর কোরিয়া, সেই সম্ভাবনা রয়েছে। সে দেশের সংবাদ মাধ্যম নির্দিষ্ট এলাকার যে সব ছবি প্রকাশ করেছে তা থেকে উত্তর কোরিয়া কতটা পারমাণবিক উপাদান উৎপাদন করেছে সে বিষয়ে আঁচ করতে অন্যদের মূল্যবান তথ্যের হদিশ দিতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরীয় কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থার (কেসিএনএ) জানিয়েছে, নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স ইন্সটিটিউট ও অস্ত্রে ব্যবহার উপযোগী পারমাণবিক উপকরণ উৎপাদন কেন্দ্র সফরকালে কিম উত্তর কোরিয়ার “পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের দারুণ কারিগরি ক্ষমতা নিয়ে বারবার তার সন্তুষ্টির কথা” জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরীয় কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থার (কেসিএনএ) ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ যে ছবি সরবরাহ করেছে তাতে কিম জং উনকে নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স ইন্সটিটিউট পরিদর্শন করতে দেখা যাচ্ছে।
কেসিএনএ বলেছে, কিম ইউরেনিয়াম উৎকৃষ্টকরণ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও একটি নির্মাণস্থলের চারধারে হেঁটেছেন। পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষেত্রে এগুলি তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ মাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে, দীর্ঘ ধূসর টিউবের লম্বা লাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে বিজ্ঞানীরা কিমকে নানা বিষয়ে বোঝাচ্ছেন। তবে, কিম কবে স্থাপনাগুলিতে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ও এগুলি কোথায় রয়েছে তা কেসিএনএ জানায়নি।
কেসিএনএ বলেছে, কিম “আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র দ্রুত গতিতে বাড়াতে” সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে এই লক্ষ্য পূরণের কথা তিনি বারবার বলেছেন।
এই সংবাদ সংস্থা বলেছে, কিম কর্মকর্তাদের নতুন ধরনের সেন্ট্রিফিউজ (যা তাদের পূর্ণাঙ্গ বা শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে তা) চালু করার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন।
কেসিএনএ আরও জানিয়েছে, কিম বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও পূর্বনির্ধারিত আক্রমণ ক্ষমতা দরকার কারণ উত্তর কোরিয়া-বিরোধী “সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্টের নেতৃত্বাধীন মিত্রবাহিনীর পারমাণবিক হুমকি আরও নগ্ন হয়ে পড়েছে এবং লক্ষণ রেখা অতিক্রম করেছে।”