আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্ত চলছে।
রবিবার (৩১ মার্চ) রাজধানী ঢাকায় আ্ওয়ামী লীগের তেজগাঁও কার্যালয়ে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ছাত্র রাজনীতি সরাসরি নিষিদ্ধ করা হলে, বুয়েট নেতিবাচক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিবাদের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “সেদিন বুয়েট ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিলো না। আর আমি যদি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকি, তাহলে বুয়েট ক্যাম্পাসে থাকতে পারব না; এটা কী ধরনের আইন।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রলীগ কর্মীদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে শনিবারও (৩০ মার্চ) বিক্ষোভ করেন তারা। বর্জন করেন সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে আবার ছাত্র রাজনীতি সক্রিয় করার চেষ্টাকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকালে তারা ড. এম এ রশিদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত হয়ে ছাত্র রাজনীতি চালুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এরপর ১১ অক্টোবর ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েট কর্তৃপক্ষ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইমতিয়াজ রহিম রাব্বির আবাসিক হলের আসন বরাদ্দ বাতিল করে। তবে, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী তাকে বহিষ্কারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে, আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করার সঙ্গে যেসব শিক্ষার্থী জড়িত বলে শনাক্ত হয়েছে, তাদেরও বহিষ্কারের দাবি জানায় আন্দোলনকারীরা।
শনাক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন; এ এস এম আনাস ফেরদৌস (আইডি: ১৮১৮০০৪), মোহাম্মদ হাসিন আরমান নিহাল (আইডি: ২১০৬১০১), অনিরুদ্ধ মজুমদার (আইডি: ২১০৬০৭৯), জহিরুল ইসলাম ইমন (আইডি: ২১১২০৩১) এবং সায়েম মাহমুদ সাজেদীন রিফাত (আইডি: ২১০৬১২৬)।
এদিকে, মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রবেশ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সেমিনার কক্ষ ব্যবহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম নীতি লঙ্ঘনের' অভিযোগে ছাত্রকল্যাণ পরিষদের পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দেন তারা।
এর আগে, শুক্রবার (২৯ মার্চ) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।