বাংলাদেশের সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করুন, প্রবাসীদের প্রতি শেখ হাসিনা

রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জার্মানির মিউনিখে, সফরকালীন আবাসে অল ইউরোপিয়ান প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য ইউরোপে বসবাসকারী আওয়ামী লীগ সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জার্মানির মিউনিখে, সফরকালীন আবাসে অল ইউরোপিয়ান প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি এ আহবান জানান।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঠিক তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে যথাযথভাবে অবহিত করতে প্রবাসী নেতাদের অনুরোধ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

“কিছু মানুষ দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা চায় না। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে;” শেখ হাসিনা বলেন।

তিনি আরো বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে আপনাদের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে েএবং ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে হবে।”

স্বাগতিক দেশের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে এবং বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে তাদের অবহিত করতে প্রবাসী ইউরোপীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

“প্রত্যেক প্রবাসীকে বাংলাদেশের একজন দূত হিসেবে কাজ করতে হবে;” যোগ করেন তিনি। বলেন, কিছু বাংলাদেশি বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রবাসী নেতাদের আরো বলেন, “সতর্ক থাকুন যাতে তারা এটা করতে না পারে।”

সরকার বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বেশ কয়েকটি হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। প্রবাসী বাংলাদেশিদের, বাংলাদেশে ব্যক্তিগতভাবে অথবা বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে বিনিয়োগ করার আহবান জানান তিনি।

“আপনি আপনার বিনিয়োগ অংশীদারদের খুঁজে বের করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন।প্রবাসী বাংলাদেশিরা এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে; বলেন শেখ হাসিনা।

দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমরা তৃণমূল পর্যন্ত উন্নয়ন নিশ্চিত করেছি।”

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে এবং ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পথে যাত্রা শুরু করবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রা মসৃণ করতে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।”

মিউনিখ থেকে দেশে ফিরেছেন শেখ হাসিনা

জার্মানিতে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদান শেষে, দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় তিনি ঢাকা পৌঁছান।
গত মাসের (৭জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর, এ্টা ছিলো তার প্রথম বিদেশ সফর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৮ মিনিটে, মিউনিখের মুচেন ফ্রাঞ্জ জোসেফ স্ট্রাউস বিমানবন্দর ত্যাগ করে। বেলা ১১টায় ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিউনিখের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। মিউনিখে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেন এবং সম্মেলনের ফাঁকে বেশ কয়েকজন বিশ্ব নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও নারী রাজনৈতিক নেতাদের (ডব্লিউপিএল) সভাপতি সিলভানা কোচ-মেহরিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক পেড্রোর আধানম গেব্রিয়েসাস, মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাজ্যের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী স্যার নিক ক্লেগ শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

সফর কালে, জার্মানি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের দেয়া একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা।