বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন যে কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগ উদ্বিগ্ন নয়।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডিতে, আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।এখানে নিষেধাজ্ঞা কেন।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা আসে, তাহলে তা বিএনপির ওপর হওয়া উচিত। তারাই নাশকতা করছে, হামলা করছে।”
“এগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা। যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায়, তাহলে শুধু বিএনপি ও তার মিত্ররা নিষেধাজ্ঞার যোগ্য;” যোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “দেশে-বিদেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর আগ্রহ কারো কারো মধ্যে রয়েছে।” উল্লেখ করেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক খাতের স্বার্থে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করেছেন।”
বর্তমান সরকার পোশাক খাতের শ্রমিকদের স্বার্থের প্রতি আন্তরিক বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, “আমাদের দল ক্ষমতায় এলে সংসদে নতুন শ্রম আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ নিয়ে পানি ঘোলা করার কোনো প্রয়োজন নেই।”
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ এটা ১৭ তারিখের আগেই হবে। এই সমস্যা আর থাকবে না।”
৩২ টি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ কোনো মনোনয়ন বাতিলের জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই।”
“নির্বাচন কমিশন তার আচরণ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন। আওয়ামী লীগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বাধা দেবে না। এবার ভোটার উপস্থিতি আরো ভালো হবে;” উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি যোগ করেন, “কোনো বাধা, হুমকি, নাশকতা ও অগ্নি-সন্ত্রাস এ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। যারা নির্বাচনে বাধা দিতে আসবে, নির্বাচনমুখী ভোটাররা তাদের প্রতিহত করবে।”
কাদের আরো বলেন, “বিএনপি ও তার মিত্ররা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তারপরও নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই। জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
রুহুল কবির রিজভী: পোশাক খাতে বিপদ ডেকে আনছে সরকার
একতরফা জাতীয় নির্বাচন করে সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশের পোশাক শিল্পের জন্য বিপদ ডেকে আনছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষ মনে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক ব্যবসা অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা চান।”
রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের দল বারবার সরকারকে সতর্ক করেছে, একতরফা নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরো গভীর করবে এবং দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে।
তিনি বলেন, “সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের (তৈরি পোশাক) বাজারকে হুমকির মুখে ফেলেছে। একতরফা নির্বাচন শুধু শেখ হাসিনার ক্ষমতার নবায়ন নয়, এটি বাংলাদেশকে ধ্বংস করার লাইসেন্সও।”
তিনি বলেন, ক্রেতাদের মতামত উপেক্ষা করে সরকারপন্থী সুবিধাবাদী মহলের শোষণমূলক নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে এবং শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দমনে অযৌক্তিকভাবে হত্যা ও নিপীড়নের আশ্রয় নিয়ে সরকার প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে দেশের বৃহত্তম রপ্তানিমুখী শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রম অধিকার রক্ষায় নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করার পর বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় নিশ্চিত বলে পোশাক কারখানার মালিকেরা আশঙ্কা করছেন।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, শুধু নির্বাচন বর্জন নয়, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
দলত্যাগ করার জন্য পুলিশ রিমান্ডে থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা-কর্মীদের পুলিশ রিমান্ডের নামে মারাত্মক নির্যাতন করা হচ্ছে।