রিজেন্ট হাসপাতালের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
দুদকের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় গত বছর মোহাম্মদ সাহেদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
একই সঙ্গে, মোহাম্মদ সাহেদ তার সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যে আপিল করেছেন, তা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে আপিল বেঞ্চ। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চকে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। সাহেদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন শাহ মঞ্জুরুল হক।
হাই কোর্টে আপিল
গত ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায়, সাহেদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। তাকে আদালত থেকে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়।
মোহাম্মদ সাহেদ এ'রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর এ মামলায় তার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাইকোর্ট।
তার জামিন আবেদন শুনে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর দণ্ডপ্রাপ্ত সাহেদকে ছয় মাসের জামিন দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।
পরে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। শুনানি নিয়ে সোমবার জামিন বহাল রাখার আদেশ দিল আপিল বিভাগ।
সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার
সাহেদকে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর তার বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং অনিয়মের নানা অভিযোগ সামনে আসতে থাকে।
পরে, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাহেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দায়ের হয়।
কারাগারে থাকাকালে ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর সম্পদের হিসাব চেয়ে সাহেদকে নোটিশ পাঠায় দুদক। নোটিশে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়।
বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে তিনি সম্পদ বিবরণী জমা না দেয়ায়, আরো ১৫ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। এরপরও সাহেদ তা জমা দেননি।
সম্পদের হিসাব না দেয়া ও অবৈধভাবে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১ মার্চ, উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলা করেন।
গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দুদক আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। এরপর গত বছরের ১৭ জুলাই সাহেদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
বিচার চলাকালে আদালতে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরে গত ২১ আগস্ট রায় ঘোষণা করা হয়।
সাহেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে অস্ত্র আইনের একটি মামলায় ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় একটি আদালত।