নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্য গ্রেপ্তার

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্য গ্রেপ্তার।

বাংলাদেশের মাগুরা জেলার সদর উপজেলার আলমখালী থেকে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে’র দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে আলমখালী যাত্রী ছাউনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব।

আনসার আল ইসলামের দুই সদস্য হলেন; পাবনা জেলার রাঘবপুর গ্রামের মো. মনিরুল ইসলামের ছেলে মো. ঈশান হায়দার ও বরিশাল জেলার মানরাতুল কুশুরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দস বারীর ছেলে আব্দুল করিম।র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবীর বলেন, “সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৬ এর একটি অপারেশন দল, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে আটক করে। এসময় তাদের সঙ্গে থাকা আরো তিন/চারজন পালিয়ে গেছেন।”

লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবীর জানান, গ্রেপ্তার ঈশান হায়দার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি একই দলের ইয়াকুব হুজুরের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের যোগদান করে দাওয়াতি কার্যক্রম করতেন। তিনি পাবনার দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করছিলেন। পাশাপাশি, তিনি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা কর ছিলেন।”

এছাড়া, আব্দুল করিম পেশায় মুদি দোকানদার ছিলেন। তিনি ও ঈশান হায়দার, একই দলের আব্দুল এর মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করেন। তিনি তার নিজ এলাকা বরিশালে দাওয়াতি কার্যক্রমের পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন।

এর আগেও, দুজনের নামেই জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এ কারণে তারা বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র‌্যাব

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র‍্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র‍্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র‍্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।