নাশকতার পেছনে রয়েছে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা: অভিযোগ রিজভীর

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, “বিএনপির চলমান আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা অগ্নিসংযোগ ও বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে।”

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় রিজভী, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে, বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ, শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য আন্দোলনরত সকল দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগের অপরাধীরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার জন্য প্রতিদিন অরাজকতায় লিপ্ত হচ্ছে। তারা গণপরিবহনে আগুন দেয়া অব্যাহত রেখেছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।”

তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে বা পুলিশ চেকপোস্টের কাছে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটার পর অপরাধীরা সহজেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে পারে। এসব অগ্নিসংযোগ রোধে বা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিষ্ক্রিয়তা রয়ছে। এটা প্রমাণ করে যে, দেশজুড়ে চলমান নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ক্ষমতায় থাকা অপশক্তি জড়িত।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “মানুষ হত্যা, জনগণের সম্পদ ধ্বংস, বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানো এবং মিথ্যা মামলায় বিভিন্ন দল ও মতকে দমন করার রাজনীতিকে আমরা ঘৃণার সঙ্গে নিন্দা জানাই।”

এদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে, সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মিডিয়া সেলের স্টেশন অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, “এই সময়ের মধ্যে সারাদেশে মোট ১৬টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে, ঢাকা মহানগরী ও ঢাকা বিভাগে চারটি, রাজশাহী বিভাগে সাতটি, চট্টগ্রাম বিভাগে চারটি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে একটি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরো জানান, “এ সব ঘটনায়, ৯টি বাস, ৬টি ট্রাক, ১টি কাভার্ডভ্যান, ১টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে যায়।”

অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে কিছুই অর্জন করা যায় না। আশা করি অগ্নিসংযোগকারীদের মধ্যে চেতনা ফিরে আসবে।” মঙ্গলবার (২১ নরভম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে, বীরত্ব পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, “সম্প্রতি আবার শুরু হয়েছে অগ্নিসন্ত্রাস।” প্রশ্ন করেন, “কীভাবে একটা মানুষ, কোনো জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে?” শেখ হাসিনা বলেন, “এটা ভুল।” তিনি বলেন, “কিছু অর্জন করতে হলে, জনগণের শক্তি প্রয়োজন; জনগণের পাশে থাকতে হবে এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। জনগণের ক্ষতি করে, বা, মানুষকে পুড়িয়ে কিছুই অর্জন করা যায় না।”