সরকার নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না, রুটিন কাজ করবে—আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যেহেতু (বুধবার) তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এ ঘোষণার পর নির্বাচনী কাজকর্ম নির্বাচন কমিশন দায়িত্বশীলভাবে করবে। কমিশনের নির্বাচনী কাজে যেসব সরকারি বিভাগ, সংস্থা বা অফিস তাদের প্রয়োজন হবে এবং যা নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে না– সেসব কাজই করবে বর্তমান সরকার। অর্থাৎ, সরকার রুটিন কাজগুলো করে যাবে। আসন্ন নির্বাচনের আগে এটাই গণতন্ত্রের মূল অবস্থান”।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এখন থেকে রুটিন কাজ করে যাবে। পলিসি ডিসিশন (নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত) নেওয়া হবে না। কারণ একটা নির্বাচন আছে। জনগণের কাছে আমাদের ম্যান্ডেট দেব। পলিসি ডিসিশন হবে না, নির্বাচন পর্যন্ত রুটিন কাজ করে যাবে’।

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, “ব্যাপারটা হচ্ছে গণতন্ত্রকে সঠিকভাবে চালিত করার জন্য নির্বাচনকালীন যে সরকার থাকে তারা পলিসি ডিসিশন নেয় না, যাতে একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে। তারা এমন কিছু করে না, যেটাতে সরকারকে জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য, আকৃষ্ট করার জন্য কিছু করছে, এ রকম একটা ব্যাপার হয়”।

আনিসুল হক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ঠিক গণতান্ত্রিক উপায়ে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে শিডিউল ঘোষণার পর যেভাবে সরকার চালিত হবে, ঠিক সেভাবেই হবে”।

এই মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা থাকবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেই সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর”।

এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, “আইন তো হবেই না, কারণ সংসদ বসবে না। কিন্তু এমন কথা আমি বলতে পারি না... এটা একটা স্বাধীন দেশ। যদি প্রয়োজন হয় অর্থাৎ অধ্যাদেশ দিয়ে আইন জারি করতে হবে কোনো বিশেষ প্রয়োজনে, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো পরিস্থিতিতে। আইন হবে না এমন কথা তো আমি বলতে পারি না”।

তিনি বলেন, “রুটিন কাজ হচ্ছে গতানুগতিক অফিস চলার জন্য যে কাজ সেগুলো। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বেতন পাওয়ার বিষয়, দৈনন্দিন কার্যক্রম—এসব কাজ বর্তমান সরকার করবে। উন্নয়ন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলবে। নতুন করে কোনো উন্নয়ন কাজ শুরু হবে না। নতুন করে কোনো প্রজেক্টও নেওয়া হবে না”।

কর্মকর্তাদের বদলিসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “সেটা নির্বাচন কমিশন নেবে কি না সেটাও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। সেটা আমি বলে দিতে পারব না”।

আনিসুল হক বলেন, “পুলিশের ব্যাপারে যদি নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য থাকে, সেটা নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবে। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, সেটা যদি যৌক্তিক হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটার ব্যবস্থা নেবে”।

পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে ইসির এখতিয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, “আইনের আওতায় বলতে হবে সবকিছুই”।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে বুধবার (১৫ নভেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।