বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চলতি একাদশ সংসদের ২৫তম অধিবেশন বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হলো চলতি সংসদের অধিবেশনের কার্যক্রম।
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু হয়। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে।
সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের মেয়াদ শুরু হয়েছে।
নির্বাচনকালীন সময়ে সংসদের অধিবেশন ডাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আবার অধিবেশন আহ্বানে কোনো বাধাও নেই।
২২ অক্টোবর একাদশ জাতীয় সংসদের ২৫তম অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনটি নয় কার্যদিবস স্থায়ী হলেও চলতি অধিবেশনের মাত্র ৮ দিনে প্রায় ২৫টি বিল পাস হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে ৭টি বিল পাস হয়।
এর আগে দশম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে ১৯টি বিল পাস হয়।
বর্তমান সংসদেও রেকর্ডসংখ্যক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৪ বছর ৯ মাসে একাদশ জাতীয় সংসদের মোট ২৫টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে সপ্তম, অষ্টম ও দশম জাতীয় সংসদের সর্বোচ্চ ২৩টি করে অধিবেশন ছিল।
এ ছাড়া, নবম সংসদে ১৯টি এবং পঞ্চম সংসদে ২২টি অধিবেশন রয়েছে। মাত্র একটি অধিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ষষ্ঠ সংসদ।
সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত অধিবেশনের রেকর্ডও এই সংসদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা মহামারির সময়ে সংসদের একটি অধিবেশন একদিনে মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়।
২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল বর্তমান সংসদের সপ্তম অধিবেশন শুরু হওয়ার পর তা দেড় ঘণ্টা স্থায়ী হয়। করোনাকালে বিশেষ আয়োজনে বেশ কয়েকটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বর্তমান সংসদে দুটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদের মোট কার্যদিবস ছিল ২৭২ দিন।
একাদশ জাতীয় সংসদে প্রায় ১৬৫টি বিল পাস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে মোট ১ হাজার ৩৩৬টি প্রশ্ন ছিল। প্রধানমন্ত্রী ৫৬৬টি প্রশ্নের উত্তর দেন। অন্য মন্ত্রীদের জন্য প্রায় ৩০ হাজার ৬৪১টি প্রশ্ন উন্থাপিত হয়েছিল। এর মধ্যে মন্ত্রীরা ১৭ হাজার ৭৬২টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর চেয়েও বেশি সময় বর্তমান সংসদে উপস্থিত ছিলেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ৫২ দিন উপস্থিত ছিলেন। তবে অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছিলেন।
একাদশ সংসদের প্রায় ৩১ জন সদস্য এ পর্যন্ত মারা গেছেন। এ ছাড়া, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন আরও তিনজন। যে আসনগুলোতে তারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন সেগুলো হলো-পটুয়াখালী-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩।
আগামী ৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন এবং ২৭ নভেম্বর পটুয়াখালী-১ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অধিবেশন আহ্বান না করা হলে এই আসনের সংসদ সদস্যরা এক মিনিটের জন্যও অধিবেশনে বসার সুযোগ পাবেন না।