খুলনা থেকে প্রথমবার যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় এসেছে সুন্দরবন এক্সপ্রেস। পদ্মা সেতুতে এটি ছিল প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল।
বুধবার (১ নভেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে খুলনা রেলস্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। ঢাকায় পৌঁছায় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে।
খুলনা থেকে নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলে অন্তত ২ ঘণ্টা সময় কমবে।
খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে প্রথম যাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, সুন্দরবন ট্রেনে করে ঢাকায় অনেকবার গিয়েছি। আগে সময় অনেক বেশি লাগত। পদ্মা সেতু হওয়াতে ঢাকায় যেতে আমাদের কম সময় লাগবে। এখন ট্রেনযাত্রা আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। আজকে প্রথম যাত্রায় যাত্রী হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।
খুলনা টিঅ্যান্ডটি জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় যাব কখনো কল্পনাও করিনি। অনেক ভালো লাগছে। নিজের দেশের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে পরিবহন এবং নিচ দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে। আর এত সুন্দর কোচ কখনো দেখিনি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
খুলনার নাগরিক নেতা আইনজীবী বাবুল হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা টু ঢাকা ট্রেন যোগাযোগের যে মেলবন্ধন শুরু হলো সেটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য সুখের খবর। তবে খুলনার মানুষ হিসেবে আমাদের দাবি, এই রুটটা যেন আরও শর্ট করা হয় এবং ট্রেনের বগির সংখ্যা বাড়ানো ও ভাড়া কমানোর বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যেন সিদ্ধান্ত নেয় সেই প্রত্যাশা করছি।
খুলনা রেলস্টেশনের মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে পোড়াদহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ভাঙা হয়ে পদ্মাসেতু দিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। নতুন এই রুট পরিবর্তনের ফলে আগের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। একইসঙ্গে সময় কমবে অন্তত ২ ঘণ্টা। বুধবার ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা ছেড়েছে ট্রেনটি।
তিনি জানান, খুলনা থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সুন্দরবন ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। অপরদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে খুলনায় এসে পৌঁছাবে। নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলের খবরে যাত্রীদের আগ্রহ বেড়েছে।
তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, সুন্দরবন ট্রেনটি ১৩টি কোচ নিয়ে যাতায়াত করবে। রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৮৬০টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি বার্থ ৪৮টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি। আর ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনের আসন সংখ্যা ৯০৮টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি সিট ৯৬টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি।
এদিকে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত সুন্দরবন আন্তনগর ট্রেনের ভাড়া (ভ্যাট ছাড়া) ধরা হয়েছে—শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৫০০ টাকা, প্রথম সিট শ্রেণির ভাড়া ৬৬৫ টাকা, প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৮৩০ টাকা, এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা ও এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ৪৯৫ টাকা।