বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুরের পূরবী সিনেমা হল এলাকায় মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পোশাক শ্রমিক আহত হয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল হাসান জানান, “সকাল ১১টার দিকে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় কর্মীদের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন।” তিনি আরো বলেন, “পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমরা তাদের শান্ত করার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম।”
ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য বুধবার (২৫ অক্টোবর) মজুরি বোর্ডের বৈঠক হয়। এর পর পোশাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মঙ্গলবারও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
এর আগে সোমবার (৩০ অক্টোবর) গাজীপুরে বেতন বাড়ানোর দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলাকালে, এক শ্রমিক নিহত হন। নগরীর ভোগড়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকের নাম রাসেল হাওলাদার। তিনি নগরীর ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেড কোম্পানির বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি ছিলেন। পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে শ্রমিকরা দাবি করলেও; পুলিশের দাবি, তাদের গুলিতে কেউ মারা যায়নি।
শ্রমিকরা জানান, “বেতন বাড়ানোর দাবিতে সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন। আন্দোলনের কারণে, ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেড-এর কারখানা ছুটি দেয়া হয়। এ সময় পুলিশ আন্দোলনরত অন্য কারখানার শ্রমিকদের ওপর গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।”
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সিদ্দিক জানান, “পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করে। একপর্যায়ে তারা একটি সিকিউরিটি কোম্পানির গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুলিবিদ্ধ হয়ে কেউ মারা গেছেন কি না এমনটা আমার জানা নেই।”
এছাড়া, ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মূল বেতনের দাবিতে, ঢাকার অদূরে, সাভারের হেমায়েতপুরে ৩০ অক্টোবর আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ শ্রমিক আহত হয়েছেন।
সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মূল বেতনের দাবিতে, শ্রমিকরা কয়েকটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।”