আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি (ইউএস) ডলারের যে ঋণ দিয়েছে তার দ্বিতীয় কিস্তির ছাড়ের বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ সরকার ও সংস্থাটির প্রতিনিধিদল। দ্বিতীয় কিস্তিতে বাংলাদেশকে আইএমএফের ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৬৮১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা রযেছে।
বাংলাদেশের অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের মাধ্যমে প্রথম পর্যালোচনা শেষ করে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আইএমএফের প্রতিনিধিদল ও বাংলাদেশ সরকার ঋণ কর্মসূচির প্রথম পর্যালোচনা সম্পন্ন করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এবারের আলোচনার ভিত্তিতে প্রতিনিধিদল প্রতিবেদন প্রণয়ন করে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য পেশ করবে। পর্ষদ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রথম পর্যালোচনা সম্পন্ন হওয়ার পর এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি বা বর্ধিত ঋণ তহবিল (ইসিএফ) ও এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) আওতায় ৪৬ কোটি ২০ লাখ আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ২১ কোটি ৯০ লাখ ডলার ঋণ ছাড় হওয়ার কথা। অর্থাৎ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তিতে মোট ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় হতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশি অংশীজন এবং আইএমএফের প্রতিনিধিদল ২০২৩ সালের আর্টিকেল ৪ বিষয়ে আলোচনা করেছে। একই সঙ্গে ইসিএফ/ইএফএফ/আরএসএফ ব্যবস্থার অধীনে প্রথম পর্যালোচনা সম্পূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিগুলোর বিষয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ের সমঝোতায় পৌঁছেছেন তারা।
বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি বলেছে, আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির অধীনে কাঠামোগত সংস্কারে যথেষ্ট অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। তবে সংকটগুলো রয়ে গেছে। অব্যাহত বৈশ্বিক আর্থিক কঠোরতা এবং বিদ্যমান দুর্বলতা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। এটি টাকা ও বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
শিগগিরিই সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য নিরপেক্ষ রাজস্ব নীতির মাধ্যমে সমর্থিত আরও আর্থিক কঠোরতা এবং বৃহত্তর বিনিময় হারের নমনীয়তা প্রয়োজন।
সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক খাত তৈরি করতে বিদ্যমান নীতি সংস্কার; নীতি কাঠামো আধুনিকীকরণ; নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা জোরদারের ওপর আলোকপাত করে আর্টিকেল ৪।
বাংলাদেশ সরকার এবং অন্য অংশীজনদের আতিথেয়তা ও খোলামেলা আলোচনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে আই্মএফের প্রতিনিধিদল।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সরকারি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি।
দলটি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, দ্বিপক্ষীয় দাতা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছে।