শারদীয় দুর্গাপূজা: সাতক্ষীরায় ধানের কারুকাজে নির্মিত হলো সোনালী প্রতিমা

সাতক্ষীরায় ধানের কারুকাজে নির্মিত হলো সোনালী প্রতিমা

দরোজায় কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা।বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এই দুর্গাপূজা বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় ব্যাপক উদ্দীপনায় উদযাপিত হয় এই শারদোৎসব। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাটি উত্তর পালপাড়া মন্দিরে এবার ১০০ কেজি ধান দিয়ে নির্মাণ হয়েছে ১৮টি প্রতিমা। উল্লেখ্য, কৃষিপ্রধান বাংলায় ধান হলো সমৃদ্ধির প্রতীক।

পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আরো সপ্তাহখানেক পর। ইতোমধ্যেই ধান দিয়ে নির্মাণ করা প্রতিমা দেখতে মানুষের ভিড় শুরু হয়েছে পূজা মণ্ডপে। উৎসবের আগেই এখানে উৎসবের আমেজ। ধানের প্রতিমা, দেখে মনে হচ্ছে যেনো সোনায় মোড়ানো। পুঁতির মালার মতো, একটা একটা করে ধান গেঁথে তৈরি করা হয়েছে এ প্রতিমা।

প্রতিমা তৈরির কারিগর পল্লত বিশ্বাস বলেন, “১৮টি প্রতিমা তৈরি করতে একমাস সময় লেগেছে। দুর্গা, কার্তিক গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, মহিষাসুর-সহ ১৮টি প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে কাঠ, বাঁশ, পাট, নকশী কাপড় খড়ের ফ্রেম বা কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। পরে দেয়া হয়েছে মাটির প্রলেপ। এর পর, কারুকাজে ব্যবহার করা হয়েছে ব্যয়বহুল চিনিগুঁড়া ধান। তবে, কিছু কিছু অংশে রং স্প্রে করা হয়েছে।”

মুরারিকাটি পালপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য ও স্থানীয় শিক্ষক প্রদীপ পাল বলেন, “প্রতি বছর ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হয় এ পূজা মণ্ডপের প্রতিমা। এ বছর প্রায় ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে প্রতিমা তৈরিতে। প্রতিমা তৈরির পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয়েছে কয়েকদিন আগে। ইতোমধ্যেই ধানের প্রতিমা দেখতে ভিড় করছেন ভক্ত ও শিল্পানুরাগী মানুষ।”

কলরোয়া পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সন্দিপ রায় বলেন, “শারদীয়া দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি ও সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আশা করছি শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আমাদের দুর্গাপূজা শেষ হবে।”

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “দুর্গাপূজা যাতে সবাই শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে উদযাপন করতে পারে; সে লক্ষ্যে প্রতিটি মণ্ডপে বাড়তি নজরদারি রাখা হবে। মণ্ডপে আনসার, গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয় স্বেচ্চাসেবকরা কাজ করবেন। পুলিশের কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে; যারা শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।”

সনাতন ধর্মশ্রাস্ত্র মতে, আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবীর আবাহন ববে। দেবী দুর্গা ঘোড়ায় চড়ে স্বর্গ থেকে মর্তলোকে আসবেন। এরপর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমীর পূজা শেষে, দশমীতে (২৪ অক্টোবর) বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে আবার ঘোড়ায় চড়েই দেবী ফিরে যাবেন স্বর্গলোকে।