৭৮ তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনে যোগদান ও সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে সম্পর্কে শুক্রবার (৫ অক্টোবর) বিকালে, গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “তারপর সেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পেরেছে বলেই জনগণ আমাদের বারবার ভোট দিয়েছে এবং একটানা (টানা তিন মেয়াদে) ক্ষমতায় আছি বলেই আজ অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে।” আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন নিয়ে এখন এত প্রশ্ন কেন?”
শেখ হাসিনা বলেন, “একটি দেশ এত দ্রুত এগিয়ে যাওয়া কি সবার জন্য মাথাব্যথার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে? আমার তো সন্দেহ হচ্ছে কীভাবে এটা (এই অগ্রগতি) ধ্বংস করা যায়, তাই এমন প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে?”
আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, “ আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলেছি যে বাংলাদেশে একসময় সেনাবাহিনীর জন্য, সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পরিচালিত জেনারেলদের সরকার ছিলো। এটি এখন পরিবর্তন হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরাই জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছি। দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন কেন সবাই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছে তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমার সন্দেহ হচ্ছে। আসলে এটা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যারা জানে নির্বাচনে তারা ভোট পাবে না, তারা এখন সর্বত্র (বিদেশিদের সঙ্গে) তোষামোদি করছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে যারা আছেন, তারা আসল বাস্তবতা বোঝেন কি না জানি না; তবে তারা বারবার এক কথা বলছেন এবং ভাঙা রেকর্ড বাজিয়ে চলেছেন।”
ওয়াকওভার করে আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করতে দেয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
এদিকে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “ওয়াকওভার’- এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে আর সরকার গঠন করতে দেয়া হবে না।” এক সমাবেশে শুক্রবার ( ৬ অক্টোবর) তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তারা (সরকার) আবার উচ্চস্বরে বলতে শুরু করেছে, আমরা সংবিধান অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবো। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী গণভবনে সংবাদ সম্মেলনেও একই কথা বলেছেন। সরকার মিথ্যাচার করে জনগণকে প্রতারিত ও বোকা বানানোর চেষ্টা করছে।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ) একটি ফাঁকা মাঠে সরকার গঠনের চেষ্টা করছে; যাকে আমরা ‘ওয়াকওভার’ বলি। সরকার এবার তার ‘অশুভ’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। তারা (পশ্চিমা দেশগুলো) বলছে, ওয়াকওভার দিয়ে নির্বাচন হবে না। এবার একটি সুষ্ঠু ও অবাধ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়া উচিত।”
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, “ আমাদের দলের অবস্থান পরিষ্কার; শেখ হাসিনা ও তার সরকারের অধীনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না।” তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপির প্রায় ৪৫ লাখ নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি এবং বিরোধী নেতাদের শাস্তি দিতে তারা এখন একটি বিশেষ সেল গঠন করেছে। এটা হলো তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষণ।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে একযোগে আন্দোলন শুরু করেছি। এখন দেশকে রক্ষা ও দুঃশাসন, নিপীড়ন ও লুণ্ঠন থেকে মুক্তির জন্য, সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে জেগে উঠতে হবে।"