কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেল সেন্টার ভাঙচুর এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃতদের মধ্যে এক শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক এক কর্মী। এ ছাড়া নবীন শিক্ষার্থীদেরকে নির্যাতনে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিন শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্বো, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের হিশাম নাজির শুভ ও একই বিভাগের মিজানুর রহমান ইমন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-কানুন লঙ্ঘনের দায়ে কাব্য, শুভ ও ইমনের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের আদেশ জারি করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেন আজাদ।
তিনি বলেন, মেডিকেল সেন্টার ভাঙচুরের ঘটনায় কাব্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং শুভ ও ইমনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে।
হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনে শুভ ও ইমনকে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে আরও তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন—শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দিন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।
এর আগে এ বছরের ১১ জুলাই কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরঞ্জাম ভাংচুর করে কাব্য ও তাঁর দুই সহযোগী। এ ঘটনায় ১৫ জুলাই তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৩ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের হিশাম নাজির শুভ, মিজানুর রহমান ইমন, শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দিন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিবসহ একদল শিক্ষার্থী একই বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান অডিটোরিয়াম এলাকায় নিয়ে এসে মানসিক নির্যাতন চালায়। তারা আবারও তাকে নির্যাতন করে।
এ ঘটনায় ১০ সেপ্টেম্বর প্রক্টর এম শাহাদাত হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক শেলিনা নাসরিন ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।