সুন্দরবনের টেকসই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের আরও গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেসকো) ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি।
সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ৪৫তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কনভেনশনের বর্ধিত অধিবেশনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা এবং ২০১৯ সালের যৌথ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার রিঅ্যাকটিভ মনিটরিং মিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতির প্রশংসাও করে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি।
মূল অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে—কৌশলগত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, ডলফিন সংরক্ষণ পরিকল্পনা এবং তেল ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ কৌশল সম্পন্ন করা।
এগুলো ম্যানগ্রোভ বনের অনন্য জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য শক্তিশালী সমন্বয় ও ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে।
সুন্দরবনের আরও টেকসই ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ সরকারের আরও গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি। এটি কৌশলগত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় (এসইএমপি) উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিটি আরও উল্লেখ করেছে, আগামী ২০ বছরে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উন্নয়ন থেকে প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ ও সমষ্টিগত প্রভাব রোধ করতে অব্যাহত প্রচেষ্টা প্রযোজন। পাশাপাশি স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্ট অ্যাসেসমেন্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যেন সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান ও সামুদ্রিক ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা রাখতে অব্যাহত রাখতে হবে।
সুন্দরবনের অরণ্যের অসামান্য সর্বজনীন মূল্যবোধের গবেষণা ও মনিটরিং সম্পর্কিত প্রতিবেদন যত দ্রুত সম্ভব পর্যালোচনার জন্য বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির কাছে জমা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশকে বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপটে প্রভাব মূল্যায়নের জন্য গাইডেন্স ও টুলকিট ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলেছে ইউনেসকো কমিটি। সাইটের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এর নিকটবর্তী সমস্ত ভবিষ্যতের শিল্প বিকাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এটি নিশ্চিত করতে হবে।
এসব পদক্ষেপ এ অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অসামান্য সর্বজনীন মূল্যবোধকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সম্পর্কে বাংলাদেশকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারকে জানাতে হবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশকে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে ২০২৫ সালের ১ ডিসেম্বরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন এবং ২০২৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্টেট অব কনজারভেশন রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।