বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ঘোষিত লক্ষ্যে সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা নয়। কে দেশ চালাবে তা স্বাধীনভাবে নির্বাচন করতে জনগণকে সহযোগিতা করাই তাদের লক্ষ্য।
পিটার হাস বলেন, “আমরা লক্ষ্যের সমর্থনে প্রায়শই কথা বলি”।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে মর্যাদার সঙ্গে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে সে জন্য মিয়ানমারে সেই পরিবেশ তৈরি নিশ্চিত করা সমগ্র বিশ্বের সম্মিলিত দায়িত্ব। “তাদের সুরক্ষিত রাখা দরকার, শিক্ষিত করা দরকার এবং তারা যেখানে বাস করছে সেখানে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা দরকার”।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস ২০২৩ উপলক্ষে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস অফ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স (ওইএ) যৌথভাবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এবারের শান্তি দিবসের ইভেন্টের থিম ছিল ‘অ্যাকশন ফর পিস: আওয়ার অ্যাম্বিশন ফর দ্য গ্লোবালগোলস’।
পিটার হাস বলেন, “আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের সারমর্ম হলো আমাদের বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শান্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দেওয়া”। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে এই প্রতিপাদ্য মনে রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, সৃজনশীলতা এবং সংকল্প বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপানারা শান্তির পক্ষে, গণতান্ত্রিক আদর্শের জন্য বাহিনী, সংযোগের চ্যাম্পিয়ন ও সমৃদ্ধির দূত হন”।
তিনি আরও বলেন, “আপনার কর্মের মাধ্যমে, আপনি আমাদের বিশ্বকে আরও শান্তিপূর্ণ, সংযুক্ত ও সবার জন্য সমৃদ্ধ স্থান করতে সাহায্য করতে পারেন”।
পররাষ্ট্র নীতিতে সামরিক পদক্ষেপের চেয়ে কূটনীতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বাংলাদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের তাগিদ দেন। উপরন্তু, তিনি ভারত-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির আস্থা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপের ওপর ফোকাস করার কথা উল্লেখ করেন।
পিটার হাস প্রশ্নোত্তর পর্বে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় নিবেদনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বৈশ্বিক শান্তি প্রচেষ্টায় শিক্ষা ও ডিজিটাল সম্পদে সজ্জিত তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) উপউপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, স্থিতিশীল দেশগুলোও উল্লেখযোগ্য বৈষম্য এবং রাজনৈতিক বিভাজনের মুখোমুখি। তাই, যুদ্ধ, সংঘাত ও বাস্তুচ্যুতির ব্যাপক প্রভাবের কারণে বিশ্বের জরুরিভাবে শান্তি প্রয়োজন।
এনএসইউর চেয়ারম্যান ও বোর্ড অব ট্রাস্টি জাভেদ মুনির আহমেদ সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শান্তি এখন একটি সংঘাতপূর্ণ বিশ্বে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সেন্টার ফর পিস স্টাডিজের (সিপিএস) সমন্বয়কারী ড. আব্দুল ওহাব গবেষণা, সংলাপ ও সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে শান্তি, টেকসই ও কূটনীতি প্রচারে সিপিএসর ভূমিকা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অনুষদ ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন উপস্থিত ছিলেন।