বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটিকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বহুপক্ষীয় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশ আগ্রহীদের সঙ্গে আমাদের অন্তর্দৃষ্টি ও দক্ষতা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত। সকল সুখের মূলে রয়েছে স্বাস্থ্য। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চারিদিকে সুখ ছড়িয়ে দিতে চাই”।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে 'শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অফ কমিউনিটি ক্লিনিকস: ইনোভেশন অ্যাপ্রোচ টু অ্যাচিভিং ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডায়াবেটিস' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের সাইড-ইভেন্টের প্লেনারি সেশনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বাংলাদেশ, ভুটান, চীন ও মালয়েশিয়া যৌথভাবে এই উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনের মূল চাবিকাঠি হলো কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা।
তিনি বলেন, “গ্লোবাল সাউথের উদীয়মান কণ্ঠস্বর হিসেবে বাংলাদেশ অর্থবহ আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের সম্ভাব্য উপায় হিসেবে এই ইস্যুটিকে সমর্থন করবে”।
শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য ৫টি অগ্রাধিকারের বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
সেগুলো হলো—১. কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে তৃণমূল পর্যায়ে দ্বাররক্ষী হিসেবে কাজ করা, যাতে স্বাস্থ্যসেবার জন্য পকেটের বাইরে বিপুল অর্থ প্রদান রোধ করা যায়; ২. কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্য এবং ডায়াগনস্টিক পরিষেবা প্রদানে সক্ষম করা, বিশেষত এনসিডিগুলোর জন্য; ৩. ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মতো ক্রমবর্ধমান জলবায়ুজনিত স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা আরও উন্নত করা; ৪. মানসিক স্বাস্থ্য ও স্নায়বিক ব্যাধিগুলোর জন্য স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা সুবিধাগুলো উন্নত করা, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোকে প্রবেশযোগ্য পরিষেবা সরবরাহ করা যায়; ৫. কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে একটি শক্তিশালী ডেটাচালিত স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচির জন্য প্রাথমিক বিল্ডিং ব্লক হিসেবে ব্যবহার করা।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। যেগুলোকে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং পুষ্টি সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোর জন্য একটি ওয়ান-স্টপ সেন্টার হিসেবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নবজাতক, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, প্রায় ৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক দক্ষ জন্মদানের জন্য সুবিধা প্রদান করে থাকে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে ৯ থেকে ১০ লাখ মানুষ সেবা নিতে আসেন। সেবাপ্রত্যাশীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সর্বজনীন টিকাদানের স্থানীয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এগুলোতে কোভিড-১৯ টিকা কভারেজ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।