বাংলাদেশের উত্তাঞ্চালীয় জেলা দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের চার সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব। এ সময় জব্দ করা হয়েছে উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও মোবাইল ফোন। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান কার্যালয়ের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আনসার আল ইসলামের আটক ৪ সদস্য হলেন; ইয়াছিন, উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতি শাখার প্রধান মুনতাসির বিল্লাহ, মুনতাসির বিল্লাহর সহযোগী আব্দুল মালেক ও সাব্বির। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, “উত্তরাঞ্চলের মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে, তরুণদের ভুলিয়ে দলের সদস্য হতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছিলো।”
তিনি জানান, “বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টম্বর) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় তরুণ জঙ্গি ইয়াছিনকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্য মতে, আনসার আল ইসলামের উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতি শাখার প্রধান মুনতাসির বিল্লাহসহ সহযোগী আব্দুল মালেক ও সাব্বিরকে দিনাজপুর থেকে আটক করা হয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। এতে বলা হয়েছে যে, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।