একতরফা নির্বাচনের প্রচেষ্টাকে জনগণ প্রতিহত করবে: মির্জা ফখরুল

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “২০১৪ সালের মতো আরেকটি একতরফা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের যেকোনো প্রচেষ্টাকে জনগণ প্রতিহত করবে।” বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা আর হতে দেবে না। জনগণ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় আওয়ামী লীগ এবার আর পার পাবে না।” তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোট ও জনগণের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির চলমান এক দফা আন্দোলনকে সফল করার বাইরে কোনো বিকল্প নেই।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা প্রায়ই বলেন, বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে। আপনারা (আওয়ামী লীগ) ষড়যন্ত্র করছেন। আপনারা এদেশের জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন।” তিনি অভিযোগ করেন, “ক্ষমতাসীন দল কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া, আরেকটি একতরফা নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে এবং খালি মাঠে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করছে।”

বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে এগিয়ে আসুন এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। আমাদের অবশ্যই এই সরকারকে প্রতিহত করতে হবে, দমন করতে হবে এবং পরাজিত করতে হবে। এই সরকার আমাদের জাতি এবং আমাদের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করছে। আমাদের দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে।”

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, “আসুন আমরা এগিয়ে যাই ও বিজয় অর্জন করি। আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর ঋণ শোধ করি, যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।” তিনি বলেন, “বর্তমান আন্দোলনের মুখে সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করছে। ভয়ে তারা গণতন্ত্রের সৈনিকদের নিবৃত্ত ও দমন করার উপায় খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের একমাত্র লক্ষ্য বর্তমান আন্দোলনে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার করা। এই আন্দোলন থেকে আমাদের পিছু হটবার কোন উপায় নেই।”

যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: হাছান মাহমুদ

এদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না; যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।” সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকার একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, “আসলে বিএনপি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভন্ডুল করতে চায়। ২০১৪ সালে তারা তা করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এবার চেষ্টা করলে জনগণ তা দমন করবে।”

হাছান মাহমুদ আরো বলেন, “বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে; সেই মানুষগুলো বসে থাকবে না। আমরা আওয়ামী লীগও বসে থাকবো না।” তিনি বলেন, “নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য দাঁড়াবে না। ২০১৪ সালের নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য দাঁড়ায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে, বিএনপি পাদানিতে বসে নির্বাচনের ট্রেনে চড়েছিলো।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা আশা করবো, এবার নির্বাচনের ট্রেনে তারা ভালোভাবে বসবে। আর তারা না আসলেও নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।” তিনি বলেন, “তাদের কোন নেতা কি বললো, তাতে কিছু যায় আসে না। জনগণ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে এটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।”