ভারতের পাঞ্জাবে রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের বিবাদে নজিরবিহীন মোড়, রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল

ভারতের পাঞ্জাবে রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের বিবাদে নজিরবিহীন মোড়, রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল

ভারতের অধিকাংশ অবিজেপি শাসিত রাজ্যে রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ সাম্প্রতিক সময়ে নজরে পড়ার মতো বেড়েছে। উত্তর ভারতের পাঞ্জাবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের বিবাদে রাজ্যপাল বানোয়ারিলাল পুরোহিতের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের মতানৈক্য সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। চলমান বিরোধকে শুক্রবার ২৫ অগাস্ট নতুন মাত্রা দিয়েছেন রাজপাল।

তিনি মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে চিঠি লিখে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তার চিঠির জবাব না দিলে তিনি রাজ্যে সংবিধানের ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারকে বরখাস্ত করতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখবেন। মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি আরও লিখেছেন, "চরম পদক্ষেপ করার আগে সতর্ক হোন। আমাকে উপেক্ষা করলে বড় খেসারত দিতে হতে পারে।"

এর আগে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে অস্বীকার করে রাজ্যপাল বানওয়ারিলাল পুরোহিত সুপ্রিম কোর্টের ভৎসর্নার মুখে পড়েন। শীর্ষ আদালত বলে বিধানসভার অধিবেশন কবে বসবে সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারই শেষ কথা বলার অধিকারী। রাজ্যপাল অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন না করলে তা অসাংবিধানিক হবে।

এবার রাজ্যপালের অভিযোগ, রাজ্যে মাদক ব্যবসা আটকাতে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করছে তা জানতে চেয়ে তার চিঠির জবাব মুখ্যমন্ত্রী দিচ্ছেন না। একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েও জবাব মেলেনি। তার বক্তব্য, চিঠির জবাব না দিয়ে রাজ্যপালের কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভগবন্ত মানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যপাল।

ভারতের পাঞ্জাবে রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপালের বিবাদে নজিরবিহীন মোড়, রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল

মাস তিনেক আগে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এন রবি, মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনকে চিঠি লিখে এক মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই চিঠির খবর জানাজানি হতে দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। হস্তক্ষেপ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পরামর্শে রাজ্যপাল মাঝরাতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে আগের চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা জানান। সংবিধান অনুযায়ী কোনও মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর আছে। রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতিরা এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।

পাঞ্জাবের রাজ্যপালের সাম্প্রতিক চিঠিটিও নজিরবিহীন। একথা ঠিক, ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারকে বরখাস্ত করতে রাজ্যপাল কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করতে পারেন। অতীতে এমন দৃষ্টান্ত অসংখ্য আছে। কিন্তু কোনও রাজ্যপালকে ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখতে দেখা যায়নি। তাও মুখ্যমন্ত্রী চিঠির জবাব না দেওয়ার সরকাররে বরখাস্তের হুঁশিয়ারি দিয়ে চিঠি অভাবনীয় ঘটনা বলেই মনে করছে রাজ্যনৈতিক মহল।