অধ্যাপকের গবেষণাপত্রে ভোটে বিজেপির কারচুপি করে জয়ের দাবি, ভারতের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হানা

অধ্যাপকের গবেষণাপত্রে ভোটে বিজেপির কারচুপি করে জয়ের দাবি, ভারতের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হানা

ভারতের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে এই মুহূর্তে অন্যতম হরিয়ানার অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়। এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর নজরে এই বিশ্ববিদ্যালয়। দু’বার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা বিনা নোটিসে হরিয়ানার এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে হানা দিয়েছে। গোয়েন্দারা অধ্যাপক সব্যসাচী দাস এবং পুলাপ্রে বালাকৃষ্ণণকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান।

যদিও দু’জনই ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।

অধ্যাপক দাসের সদ্য প্রকাশিত গবেষণাপত্র নিয়ে দেশ জুড়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। অর্থনীতির এই অধ্যাপক তার গবেষণাপত্রে দাবি করেছেন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বহু আসনে বিজেপি কারচুপি করে জিতেছে। বিশেষ করে অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী আসনগুলির ফলাফল সন্দেহজনক বলে তার দাবি।

ঘটনাক্রম অনুযায়ী দেখলে, এই গবেষণাপত্র প্রকাশের পর থেকেই নানা মহলের চাপের মুখে পড়েন অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে না বললেও মৌখিক পরামর্শ দেয় বিতর্ক এড়াতে তিনি যেন প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যান। চাপের মুখে চাকরি ছাড়েন ওই অধ্যাপক। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য, অধ্যাপক দাস ছুটিতে গিয়েছেন। তিনি পুণেতে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অস্থির পরিস্থিতির প্রতিবাদে চাকরি ছাড়েন পুলাপ্রে বালাকৃষ্ণণ। দুই শিক্ষকের চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত গোপন নেই।
তারপরও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা প্রথমে ওই অধ্যাপকদের খোঁজ করেন। তাদের না পেয়ে গোয়েন্দারা অর্থনীতি বিভাগের অন্য অধ্যাপকদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বলা হয়, কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে লিখিতভাবে তা জানাতে হবে। একাধিক সংবাদমাধ্যমে গোয়েন্দা হানার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের শিক্ষামহলে শোরগোল শুরু হয়।

চাকরি ছাড়ার পর অধ্যাপক পুলাপ্রে জানান, অধ্যাপক দাসের গবেষণাপত্রের ভালমন্দ নিয়ে তার কোনও অভিমত নেই। তিনি চাকরি ছেড়েছেন, কারণ ওই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাচর্চার মুক্ত পরিবেশ নেই।

বিরোধীদের অভিযোগ, অধ্যাপক দাসের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হওয়ার পর বেসরকারি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতাশালী মহল থেকে চাপ দেওয়া হয়েছে। তার জেরেই দুই অধ্যাপককে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। আর কোনও অধ্যাপক যাতে একই পথে না হাঁটেন সে জন্যই গোয়েন্দা পাঠিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য সরকারিভাবে গোয়েন্দা হানা নিয়ে মুখ খোলেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমক রায়চৌধুরী এই ব্যাপারে নীরব। মুখ খোলেননি অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অশ্বিনী দেশপান্ডে-ও।