চাঁদের শেষ কক্ষে প্রবেশ করল ভারতের চন্দ্রযান-৩

বুধবার ১৬ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পঞ্চম তথা শেষ কক্ষপথে প্রবেশ করে চন্দ্রযান-৩।

চাঁদের শেষ কক্ষপথে প্রবেশ করল ভারতের চন্দ্রযান-৩। চাঁদ থেকে এখন দূরত্ব কমে হয়েছে ১৫৩ কিমি X ১৬৩ কিমি। পরিকল্পনা মতো বুধবার ১৬ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পঞ্চম তথা শেষ কক্ষপথে প্রবেশ করে চন্দ্রযান-৩। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, সামান্য অপেক্ষার পরেই ১৭ অগাস্ট বৃহস্পতিবার চন্দ্রযানের মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে ল্যান্ডার ও রোভার। সব ঠিক থাকলে ২৩ অগাস্টই চাঁদে নামার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ইসরো-র তরফে জানানো হয়েছে, ১৫৩ কিমি X ১৬৩ কিমি কক্ষপথে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রবেশ করতে পেরেছে চন্দ্রযান-৩। এখন উপর থেকে নীচের দিকে নামছে সে। একটা একটা করে চাঁদের কক্ষপথ পার হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় গতিবেগও কমাচ্ছেন ইসরো-র বিজ্ঞানীরা।

সবশেষ কক্ষপথে পৌঁছনো মানেই চাঁদের থেকে দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ১০০ কিলোমিটার। সেখান থেকেই গতি কমিয়ে চাঁদের মাটিতে নেমে আসার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছলে সফট ল্যান্ডিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু করবেন বিজ্ঞানীরা। সেখান থেকে প্রায় ২০ মিনিট ধরে সময় ও গতিবেগের অঙ্কটা সঠিকভাবে মিলিয়ে ধীরে ধীরে হাল্কা পালকের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুর ৭০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায় নামবে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। এবার দুর্ঘটনা এড়াতে ল্যান্ডিংয়ের জায়গার পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে। নামার সময় যদি বিক্রমের কলকব্জায় কোনও গন্ডগোল হয়, যদি ইঞ্জিন বা সেন্সর বিকলও হয়ে যায়, তাহলেও চাঁদের বুকে ল্যান্ডারকে নামানো যাবে। বিকল্প উপায় ভেবেই রেখেছে ইসরো।

চার বছর আগের দ্বিতীয় চন্দ্রযান মিশনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চন্দ্রযান ৩-এ একাধিক পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইসরো-র চেয়ারম্যন এস সোমনাথ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান ২-তে কী ত্রুটি হয়েছিল, তা খতিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। সেইসব ভুল শুধরে চন্দ্রযান-৩ নতুন করে তৈরি করা হয়েছে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে চাঁদের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে ইসরোর চন্দ্রযানের বিক্রম। ঐতিহাসিক সেই চন্দ্রযাত্রা পুরোপুরি সফল হয়নি। অরবিটার পৃথিবীর কক্ষে পৌঁছলেও ল্যান্ডার বিক্রম সফট ল্যান্ডিং করতে পারেনি। ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ইসরো-র স্বপ্নের অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল। এবার সেই ভুলগুলো হবে না বলেই দাবি করেছে ইসরো। নতুন ব্লু-প্রিন্টে যা যা পরিবর্তন করা হয়েছে তা সঠিকভাবে কাজ করলে ২৩ অগাস্ট চাঁদের বুকে ইসরো-র চন্দ্রযানের অবতরণ সফল হবে। চাঁদের আঁধার পিঠের রহস্য খুঁজে বের করার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে ভারত।