বান্দরবান ও চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমিক হিসাব অনুযায়ী বন্যায় চট্টগ্রামের অন্তত ১৩৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে চট্টগ্রামে অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ সময় ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব মিলিয়ে ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলার।

সোমবার (৭ আগস্ট) রাত থেকে ৩ দিন কার্যত পানির নিচে ছিলো এসব এলাকা। টানা ৩ দিন বন্ধ ছিলো বিদ্যুৎ। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হলেও এখনো অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়নি বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন সিনিয়র কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, “বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির অর্থমূল্য ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। গত ৩ দিন আমরা খাবার বরাদ্দ দিয়েছি। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে মোট ১ হাজার ১৯৩টি।”

এদিকে বুধবার থেকে পানি কমতে শুরু করায় বিভিন্ন এলাকায় নৌকা ডুবে ও স্রোতের টানে ডুবে নিখোঁজ হওয় অনেক নারী-পুরুষ-শিশুর মরদেহ ভেসে উঠে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় ৩ উপজেলা ও মহানগরীতে মোট ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসন মৃত্যুর এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সাফুল্লাহ মজুমদার জানান, “এখন পর্যন্ত বন্যায় চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন তিনজন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন; সাতকানিয়ায় ৭ জন, লোহাগাড়ায় ৪, চন্দনাইশে ২, বাঁশখালীতে ১, রাউজানে ১ জন এবং চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১ জন।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে; তিন দিন ধরে বিদ্যুৎহীন সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকা। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ নানামুখী সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, “এখন পর্যন্ত সাতকানিয়া ছাড়া দক্ষিণের সব উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সাতকানিয়ায় কাজ চলছে, দ্রুতই সংযোগ দেয়া যাবে বলে আশা করছি।”

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলায় ৬ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয় ৬ হাজার ৭৫৩ জনকে।

চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে; দক্ষিণের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া ও আনোয়ারা এবং উত্তরের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির ব্যাপক এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।