তবে এই দীর্ঘতম ভাষণ নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন দেশের অন্যতম জ্বলন্ত ইস্যু মণিপুরের জন্য মাত্র কয়েক মিনিট সময়ই বরাদ্দ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, সেই প্রসঙ্গ এসেছে বক্তৃতের প্রথম ৯৩ মিনিট পেরিয়ে যাওয়ার পরে। অর্থাৎ দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় অন্য প্রসঙ্গে কথা বলার পরে মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। ততক্ষণে বিরোধীরা সকলে ওয়াক আউট করে বেরিয়েও গেছিলেন।
প্রসঙ্গত মণিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই সংসদের মধ্যে মোদীর বিবৃতির দাবিতে তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট।
তবে সেই অনাস্থার উপর ভাষণ দিতে উঠে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রসঙ্গে পৌঁছতেই লেগে গেছে দেড় ঘণ্টার বেশি সময়। তার আগে অবশ্য তৃণমূল-সহ বিরোধীদের তরফে একাধিকবার প্রশ্ন তোলা হয়, আর কতক্ষণ পরে মণিপুর নিয়ে বলবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপরে রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধী সাংসদরা সংসদ থেকে ওয়াক আউটের পরেই তার বক্তব্যে আসে মণিপুর ইস্যু। ১ ঘণ্টা ৩৩ মিনিটের মাথায়।
মণিপুর নিয়ে কথা বলার আগের দেড় ঘণ্টা প্রধানমন্ত্রী সংসদে কেবল বিরোধী শিবিরকে আক্রমণ করেই কাটান বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বলেন, "আপনাদের একটা গোপন কথা বলি, ঈশ্বরের কাছে এক অদ্ভুত বর পেয়েছেন বিরোধীরা। ওরা যাদেরই খারাপ চেয়েছেন, তাদেরই ভাল হয়েছে। ভগবান চান, এনডিএ ২০২৪ সালেও সরকার গঠন করুক ভারতে। তার জন্যই তিনি বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের মধ্যে দিয়ে এই সুযোগ করে দিয়েছেন আমাদের।"
বিরোধীরা দাবি করেছেন, এসব লঘু কথাবার্তা বলে, নানাভাবে নানা হাসির কথা বলে মণিপুর এড়িয়ে গেছেন মোদী। এমনকি বিরোধী বেঞ্চ থেকে ঘনঘন স্লোগানও উঠতে থাকে মণিপুর নিয়ে। তাতেও মণিপুর নিয়ে কথা না বলে উল্টে মোদী বলেন, "আপনারা স্লোগান দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যাবেন।" এর পরে সংসদ থেকে বিরোধী সাংসদরা ওয়াক আউট করলে কয়েক মিনিটের জন্য মণিপুর জায়গা পায় মোদীর ভাষণে। সেক্ষেত্রেও তিনি লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে উদ্দেশ্য করে খানিক অভিযোগের সুরে বলেন, "এরা অভিযোগ করতে পারেন, অথচ এদের জবাব শোনার ধৈর্যটুকুও নেই। এরা এখন পালিয়ে যাচ্ছেন!"
এর পরে মোদী দাবি করেন, মণিপুরের অশান্তির ‘জননী’ হল কংগ্রেসই। তার কথায়, "মণিপুরে নিশ্চয়ই শান্তির সূর্য উঠবে। মণিপুর আবার নতুন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাবে। মণিপুরের মা-বোনেদের আমার আবেদন, গোটা দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে। সংসদ সঙ্গে আছে। ওখানে সমস্যার সমাধান হবে। শুনে খারাপ লাগছে, এই সংসদ থেকেই কেউ কেউ ভারতমাতার মৃত্যু কামনা করছেন। ওই মন্তব্যে ভারতবাসী দুঃখ পেয়েছে।"