বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে বিনয়ী হওয়ার ভান করছে বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, “একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে তারা।”
বিএনপি মহাসচিব জানান, সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে, তারা শিগগির তাদের এক দফা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মপন্থা ঘোষণা করবেন। তিনি বলেন, “যেহেতু নির্বাচন সামনে, তারা (আওয়ামী লীগ) তাদের রং বদলাচ্ছে এবং ভদ্রলোক হওয়ার ভান করছে... কিন্তু, তাদের একমাত্র লক্ষ্য যে কোনো উপায়ে, এমনকি ক্ষমতা ব্যবহার করেও, নির্বাচনকে নিজেদের পক্ষে আনা। তারা এই লক্ষ্যে একটি নীলনকশা তৈরি করছে।”
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেজন্য সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা করছে।” তিনি বলেন, “বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে যাতে নির্বাচনের সময় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা না যায়। বিরোধী দলকে, রাজনৈতিক দল হিসেবে অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনার পথ তৈরি করছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিরোধীদলীয় নেতাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করায়, হাইকোর্টের বিচারপতিরাও এখন অসহায় বোধ করছেন। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর, তাকে আবার জেলগেটে আটক করে নতুন মামলায় জড়ানো হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। আমাদের রাজশাহীর নেতা মিলন জামিন পেলেও নতুন মামলায় তাকে আবার জেলগেটে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা কি ধরনের রাষ্ট্র? এ কেমন প্রশাসন ও শাসনব্যবস্থা? যেখানে শুধুমাত্র বিরোধী দলের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অপরাধে মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হচ্ছে... হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েও তারা মুক্তি পাচ্ছেন না।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমের কিছু বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক সরকারের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়ে চলেছেন। তারা কীভাবে এই কার্যকলাপগুলোকে সমর্থন দিতে পারেন? এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের অধিকার পুরোপুরি কেড়ে নিয়েছে।”
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৪ তম জন্মদিনে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রকে নিরাপদ রাখতে এবং অসাম্প্রদায়িক মানবতাবোধকে বাচিয়ে রাখতে হলে বিএনপিকে প্রতিহত করতে হবে।” মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৪ তম জন্মদিনে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “পঁচাত্তর থেকে যে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এ দেশে শুরু হয়েছে, সেই ধারাবাহিকতায় ১৫ আগস্ট, ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর সহচর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রনেড হামলা হয়েছে; সেই হামলার প্রধান টার্গেট ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এই ইতিহাসের পেছনে রয়েছে বিএনপি। দলটি বাংলাদেশে হত্যা, ষড়যন্ত্রের হোতা।”