ভারতের বাঘ রাজধানী মধ্য প্রদেশে কুনো জাতীয় উদ্যানে আবারও চিতার মৃত্যু, বাড়ছে উদ্বেগ

চিতা বাঘ

মাত্র দিন কয়েক আগেই বাঘশুমারিতে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাঘ থাকায় ভারতের বাঘ রাজধানীর তকমা পেয়েছে মধ্য প্রদেশ। কিন্তু বছরের শুরু থেকেই সে রাজ্যের কুনো জাতীয় উদ্যানে পরপর চিতা মৃত্যু খবর হয়েছে। এবার আবারও কুনো-তে এক চিতার মৃত্যু হল রাজ্যের বন দফতর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে একথা। যদিও মৃত্যুর কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

এই নিয়ে শাবক এবং পূর্ণবয়স্ক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৯টি চিতার মৃত্যু হল সেখানে। গত জুলাই মাসেই মৃত্যু হয়েছিল দুটি চিতার। তারপর অগাস্ট পড়তে না পড়তেই ফের আরও একটি আফ্রিকান চিতার মৃত্যু হল।

ভারতে চিতার পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার বিষয়ে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হওয়ার পরেই সেখান থেকে ভারতে আনা হয়েছিল চিতাগুলিকে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কুনো জাতীয় উদ্যানে ১২টি চিতা আনা হয়েছিল। তারও আগে ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষে নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয়েছিল কুনোতে। পরে কয়েকটি চিতার শাবকও জন্মায়। সব মিলিয়ে ২৪টি চিতা ছিল কুনো ন্যাশনাল পার্কে। কিন্তু দেশে আনার পর থেকেই মৃত্যু হচ্ছিল একের পর এক চিতার। বুধবার পর্যন্ত মোট ৯টি চিতা মারা গেল।

এর আগেই চিতার মৃত্যুমিছিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের প্রতি সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, "এটাকে একটা প্রেস্টিজ ইস্যু বানিয়ে ফেলবেন না।" বিচারপতিরা জানতে চান, কেন এত জায়গা থাকতে শুধুমাত্র একটি জায়গাতেই রাখা হচ্ছে চিতাগুলিকে।

বিচারকদের প্রশ্নের জবাবে সরকারপক্ষের আইনজীবী ঐশ্বর্য ভাটি জানান, সরকারের তরফে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি একথাও জানান, জায়গা পরিবর্তন করার সময় ৫০% চিতার মৃত্যু স্বাভাবিক ঘটনা।

সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার শুনানিতে এতগুলি চিতার মৃত্যু কী কারণে হয়েছে, তা জানতে চায়। প্রাণীগুলি ভারতের জলবায়ুতে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে কিনা, নাকি কিডনি কিংবা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগে মারা যাচ্ছে, সে ব্যাপারে জানতে চান বিচারপতিরা। এর উত্তরে সরকারি কৌঁসুলি জানান, সংক্রমণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে এতগুলি চিতার।

সেকথা জানার পরেই বিচারপতিরা বলেন, রাজস্থানের একটি অভয়ারণ্য চিতা সংরক্ষণের জন্য বিখ্যাত। সেখানে কুনোর চিতাদের রাখার কথা সরকারকে বিবেচনা করে দেখতে বলেন বিচারপতিরা।