ভারতের উত্তরে হরিয়াণায় আচমকাই শুক্রবার ৩১ জুলাই ভয়াবহ হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। সেই হিংসার আগুন এখনও জ্বলছে হরিয়ানায়। তা সাম্প্রদায়িক চেহারা নিতে শুরু করবছে। রাজ্যের সেক্টর ৫৭-এর অঞ্জুমান জামা মসজিদে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। মসজিদ লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় সেই মসজিদের ইমামের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে হরিয়ানায় এই হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪। মসজিদের ইমাম-সহ দুজন হোমগার্ড ও এলাকার একজন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার গভীর রাতে। রাত থেকেই এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। দমকল এসে আগুন নিভিয়েছে। মঙ্গলবার ১ অগাস্টও এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, সোমবার একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হরিয়ানার নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। উল্লেখ্য, হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় গতকাল হিংসা ছড়ায়।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। সেই মনু ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেছিল এই ধর্মীয় মিছিলে সে থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা আটকান কয়েকজন। তারপরেই চরম উত্তেজনা ছড়ায়। মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। মসজিদ লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি চালানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবারের সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে অনেকেই পুলিশকর্মী।
নুহ্ এলাকায় যে হিংসার আগুন ছড়ায় তা ক্রমশ দাবানলের মতো ছড়াতে থাকে গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইঁট বৃষ্টি। ঘটনায় দুই হোম গার্ডেরও মৃত্যু হয়েছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম – নীরজ এবং গুরুসেবক। এরপর থেকেই এলাকায় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। গুজব এবং প্ররোচনা ঠেকাতে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।