সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি: ইমন গিলমোর

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর। (ফাইল ছবি)

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর বলেছেন যে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আরো কী কী করা দরকার, সে বিষয়ে তারা অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, “সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি। বিশেষত, এই বছরে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাবার বরাদ্দ কমানোর বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।”

গিলমোর সম্প্রতি বাংলাদেশে পাঁচ দিনের সফর শেষে ফিরে গেছেন। ইউএনবিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বিষয়টির সমাধান করতে হবে এবং মিয়ানমারেই এর সমাধান করতে হবে। এই সংকটের সমাধান হতেই হবে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার; যাতে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সসম্মানে নিজ দেশে ফিরতে পারেন।”

ইমন গিলমোর বলেছেন, আন্তর্জাতিক দাতাদের অর্থায়ন কমায়, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাবার বরাদ্দ প্রথমে ১২ ডলার থেকে ১০ ডলার (প্রতি মাসে জনপ্রতি) এবং পরবর্তী সময়ে ৮ ডলার করা হয়েছে।

তিনি কক্সবাজারে একটি পুরো দিন কাটান। এসময় তিনি ৬ বছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যার কথা শোনেন। গিলমোর চার বছর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন।

এবারের সফরে তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করেছেন, “বিশ্বজুড়ে বর্তমান সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি।” তিনি বাংলাদেশ সরকার ও শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) অফিসের প্রশংসা করেন। বলেন, “আমরা প্রতিবেশী ও আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে মিলে কাজ করছি।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ইইউ বিশেষ প্রতিনিধি জানান, “তারা (রোহিঙ্গা) আরো বেশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় এবং তা করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করতেও তারা খুব আগ্রহী।”

গিলমোর আরো জানান, “রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছিলো। এরপর সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতায় বসে। অর্থাৎ,অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির সঙ্গে আরো একটি নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে; তাই অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। তবে, আমরা মিয়ানমার সরকারের ওপর সাত দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।”

চলতি বছরের শুরুর দিকে ইইউ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশে তাদের স্বাগতিক সম্প্রদায়ের মানবিক চাহিদা মেটাতে ৪ কোটি ৩০ লাখ ইউরো সহায়তা করেছে। ইইউ জানিয়েছে, তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ২ কোটি ৩০ লাখ ইউরো সহায়তা অব্যাহত রাখবে। যার একটি অংশ দেশে দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে।

এই মাসে ইইউ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশে স্থানীয় জনগণের মানবিক চাহিদা পূরণের জন্য অতিরিক্ত ১ কোটি ২৫ লাখঝ ইউরো সহায়তা দিয়েছে।