ভারতের সংসদে 'ইন্ডিয়া’র অনাস্থা প্রস্তাবে আলোচনায় সায় দিলেন লোকসভার স্পিকার

ভারতের সংসদে 'ইন্ডিয়া’র অনাস্থা প্রস্তাবে আলোচনায় সায় দিলেন লোকসভার স্পিকার

বিজেপি-বিরোধী ২৬টি দলের জোট 'ইন্ডিয়া'-র আনা অনাস্থা প্রস্তাব আলোচনার জন্য গৃহীত হলো ভারতের লোকসভায়। কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ আজ জোট “ইন্ডিয়া’-র তরফে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন। স্পিকার সেটি নিয়ে আলোচনার অনুমোদন দেন। স্পিকার জানিয়েছেন তিনি আলোচনার তারিখ পরে জানিয়ে দেবেন।
সংসদ সূত্রে খবর তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি আলাদা করে একটি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, 'নিয়ম হল ৫০ জন সাংসদ মিলে প্রস্তাব জমা করলে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। ১০ দিনের মধ্যে স্পিকারকে জানাতে হবে আলোচনার তারিখ।"

রাজনৈতিক মহলের মতে যে কারণে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে ঠিক একই কৌশল মাথায় রেখে সরকারও তাতে আলোচনায় সাড়া দিচ্ছে। বিরোধীরা চেয়েছিল সরকার যাতে মনিপুর প্রসঙ্গ এড়িয়ে একতরফা ভাবে ৩১টি বিল পাস করিয়ে নিতে না পারে। অনাস্থা প্রস্তাব আলোচনা হলে সংসদের নেতা তথা সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর জবাব দেওয়াটা সংসদীয় রীতি। ফলে নরেন্দ্র মোদী মণিপুর নিয়ে নীরব থাকলেও অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনার উপর জবাবী ভাষণে তাঁকে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটির বিষয়ে বলতে হতে পারে। যদিও একথাও ঠিক প্রধানমন্ত্রী চাইলে জবাবী ভাষণেও মণিপুর প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে পারেন। যেমন লোকসভার বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাষ্ট্রপতির দেওয়া ভাষণের উপর বির্তকের জবাবী বক্তৃতায় মোদী আদানি ইস্যু এড়িয়ে গিয়েছিলেন। যদিও বিরোধীরা সরকারকে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ শনিয়েছিল ওই ইস্যুতেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে সরকার পক্ষের কৌশল হল তাঁরা এই সুযোগে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির নারী নির্যাতন, অনুন্নয়ন , অপশাসন নিয়ে সরব হবে। নভেম্বরে রয়েছে চার রাজ্য রাজস্থান, ছত্তিসশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় বিধানসভার নির্বাচন। এর মধ্যে শুধু মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় আছে। বাকি তিন রাজ্যে ক্ষমতায় বিরোধীরা।

রাজস্থানে নারী নির্যাতন নিয়ে সেই রাজ্যের একজন মন্ত্রী স্বয়ং বিধানসভায় সরব হয়েছেন। এই অপরাধে তাঁকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মন্ত্রী আবার একটি লাল ডায়েরি তুলে ধরে দাবি করছেন অশোক গেহলট সরকারের দুর্নীতির যাবতীয় তথ্য আছে ডায়েরির পাতায় পাতায়। ছত্রিশগড়েও আদিবাসী মহিলাদের উপর অত্যাচারের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। একই পরিস্থিতি তেলেঙ্গানাতেও। অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের পরিস্থিতি নিয়েও বিতর্কের ঝড় তুলতে চায় বিজেপি।