ভারতে কুনো জাতীয় উদ্যানে পরপর চিতার মৃত্যু: উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ কেন্দ্র সরকারকে

চিতা বাঘ

ভারতের মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতার মৃত্যু নিয়ে মামলায় এবার ভারতের কেন্দ্র সরকারকে কাঠগড়ায় তুলল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার কুনোয় চিতার মৃত্যুমিছিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের প্রতি সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, "এটাকে একটা প্রেস্টিজ ইস্যু বানিয়ে ফেলবেন না।"

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুনো জাতীয় উদ্যানে ১২টি চিতা আনা হয়েছিল। ভারতে চিতার পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার বিষয়ে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হওয়ার পরেই সেখান থেকে ভারতে আনা হয়েছিল চিতাগুলিকে। তারও আগে ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষে নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয়েছিল কুনোতে। পরে কয়েকটি চিতার শাবকও জন্মায়। সব মিলিয়ে ২৪টি চিতা ছিল কুনো ন্যাশনাল পার্কে। কিন্তু দেশে আনার পর থেকেই মৃত্যু হচ্ছিল একের পর এক চিতার। শাবক এবং পূর্ণবয়স্ক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৮টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। গত সপ্তাহেও দুটি চিতা মারা গেছে।

সেই নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলাও দায়ের হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্র এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার একটি বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, কেন সরকার এই ব্যাপারটাকে ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ বানিয়ে ফেলছে? বিচারপতিরা আরও জানতে চান, কেন এত জায়গা থাকতে শুধুমাত্র একটি জায়গাতেই রাখা হচ্ছে চিতাগুলিকে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আদালত।

বিচারকদের প্রশ্নের জবাবে এদিন সরকারপক্ষের আইনজীবী ঐশ্বর্য ভাটি জানান, সরকারের তরফে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি একথাও জানান, জায়গা পরিবর্তন করার সময় ৫০% চিতার মৃত্যু স্বাভাবিক ঘটনা।

এদিন আদালত এতগুলি চিতার মৃত্যু কী কারণে হয়েছে, তা জানতে চায়। প্রাণীগুলি ভারতের জলবায়ুতে খাপ খাইয়ে নিতে পারছে কিনা, নাকি কিডনি কিংবা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগে মারা যাচ্ছে, সে ব্যাপারে জানতে চান বিচারপতিরা। এর উত্তরে সরকারি কৌঁসুলি জানান, সংক্রমণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে এতগুলি চিতার।

রাজস্থানের একটি অভয়ারণ্য চিতা সংরক্ষণের জন্য বিখ্যাত। সেখানে কুনোর চিতাদের রাখার কথা সরকারকে বিবেচনা করে দেখতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।