ড. ইউনূসের দানকর সংশ্লিষ্ট আপিলের শুনানি ২৩ জুলাই

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর আরোপিত দানকর বৈধ ঘোষণা করা রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে (লিভ টু আপিল) নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদনের ওপর শুনানি ২৩ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (১৭ জুলাই) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে, চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এর আগে, ২১ জুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়। গত ৯ জুলাই আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ১৭ জুলাই দিন রেখেছিলেন চেম্বার আদালত। সে অনুসারে, আবেদনটি সোমবার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে।

জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী, ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে, প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায় এনবিআর। আর, ২০১২-২০১৩ করবর্ষে, ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে, ১ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার টাকা দানকর দাবি করা হয়। এছাড়া, ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে, ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে, ১ কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর।

দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস। তার দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এ কর দাবি করতে পারে না। এরপর ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর তার আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়। ২০১৫ সালে তিনি হাইকোর্টে তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।

মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে, দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে, মৃত্যু ও পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ চিন্তা করে নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে যে টাকা দান করেছেন, সেই দানের বিপরীতে এনবিআরের আরোপ করা দানকর বৈধ ঘোষণা করে গত ৩১ মে রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন প্রতিষ্ঠানে ৭৭ কোটি টাকা দান করেছিলেন। ড. ইউনূস বলছেন, এর বিপরীতে কর দিতে হবে না। আমরা বলেছি দিতে হবে, এ কারণে এনবিআর তাকে নোটিশ দিয়েছিলো।”

অ্যাটর্নি জেনারেল আরো জানান, “পরে, তিনি হাইকোর্টে তিনটি রেফারেন্স মামলা করেন। হাইকোর্ট রেফারেন্স সমূহকে ঠিক বলেছেন। আবেদনগুলো খারিজ করে দিয়েছেন। এখন এনবিআরের দাবি করা কর দিতে হবে। এনবিআর ১৫ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছিলো। ইতোমধ্যে তিনি ৩ কোটি টাকার মতো দিয়েছেন। এখন বাকি ১২ কোটি টাকার বেশি কর পরিশোধ করতে হবে।”