ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের চাপে পড়েছে অর্থনীতি: বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকায় বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবন। (ফাইল ছবি)

ডলার সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতি সম্পর্কিত একটি ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে একথা উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের চাপে পড়েছে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং আর্থিক খাতের অস্থিতিশীলতার কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে, রয়েছে বহিরাগত প্রভাব। এসব কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে।

বিষয়টি ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং পরিস্থিতি রাতারাতি সমাধান হবে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, “সুতরাং, ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভবিষ্যতের আর্থিক পরিকল্পনায় সতর্ক থাকতে হবে।”

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি তিন মাসে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির হালনাগাদ তথ্যসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের চাপে পড়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব এখনো অর্থনীতিতে পড়েনি; তবে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর নির্ভরশীল। বিদেশি বিনিয়োগের বেশির ভাগই আসে এসব অঞ্চল থেকে। রপ্তানির প্রায় ৮২ শতাংশ যায় এসব দেশে।

অন্যদিকে, আমদানির ৭২ শতাংশ আসে ভারত ও চীন থেকে। এখন সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বর্তমানে যে ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত দেখা দিয়েছে, তাতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভূ-রাজনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের মতবিরোধ সামনে এসেছে। এই দুই দেশের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুবই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এছাড়া, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কঠোর সমালোচনা করছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি নীতি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় প্রায় ১২ শতাংশ কমেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশ এরই মধ্যে মোকাবেলা করছে। যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এখন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আঘাত হানছে। তবে, আর্থিক খাতে যে অস্থিতিশীলতা ছিলো এখন তা সহজ হতে শুরু করেছে। ব্যাংকগুলোতে তারল্য সরবরাহ বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে আগামী দিনগুলোতে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।