এশিয়ায় প্রথম: ৭৮ বছরের বৃদ্ধার দুটি ফুসফুসই প্রতিস্থাপন করে নজির ভারতের চেন্নাইয়ের ডাক্তারদের

৭৮ বছরের বৃদ্ধার দুটি ফুসফুসই প্রতিস্থাপন করে নজির ভারতের চেন্নাইয়ের ডাক্তারদের

ফুসফুস প্রতিস্থাপনের মতো জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে নজির গড়ল দক্ষিণভারতের চেন্নাইয়ের এক মাস্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল। সেখানকার অভিজ্ঞ ডাক্তাররা একজন ৭৮ বছর বয়সী বৃদ্ধার দুটি ফুসফুসই প্রতিস্থাপন করেছেন। এমন অপারেশন এশিয়ায় এই প্রথমবার হল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপারেশন সফল হয়েছে। মহিলার শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল।

ইনস্টিটিউট অব হার্ট অ্যান্ড লাং ট্রান্সপ্লান্ট-এর ডিরেক্টর ডা. কেআর বালাকৃষ্ণাণ, কো-ডিরেক্টর ডা. সুরেশ রাও কেজি এবং পালমোনোলজি বিভাগের ডিরেক্টর ডা. অপার জিন্দাল এই অস্ত্রোপচার করেছেন। তাঁরা বলছেন, অ্যাকিউট রেসপিরেটারি ডিসট্রেস সিনড্রোম-এ ভুগছিলেন ওই বৃদ্ধা। তাঁর দুটি ফুসফুসই অকেজো হয়ে গিয়েছিল। গত ৫০ বছর ধরে ইকমো সাপোর্টে ছিলেন ওই বৃদ্ধা। ইকমো হল ‘একস্ট্রা-কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন’ পদ্ধতি। একে ‘একস্ট্রা-কর্পোরিয়াল লাইফ সাপোর্ট’ বলা হয়। হার্ট ও ফুসফুসের রোগে এই পদ্ধতির প্রয়োগ করেন ডাক্তাররা। শ্বাসপ্রশ্বাসে যখন স্বাভাবিক ভাবে অক্সিজেন ঢুকতে পারে না শরীরে, এমনকি ভেন্টিলেটরের মতো যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও কাজ হয় না, তখন কৃত্রিমভাবে এই পদ্ধতিতে শরীরে অক্সিজেন ঢোকানো হয়।

৭৮ বছরের বৃদ্ধার দুটি ফুসফুসই প্রতিস্থাপন করে নজির ভারতের চেন্নাইয়ের ডাক্তারদের

ইকমো সাপোর্টেও পুরোপুরি কাজ না হওয়ায় ফুসফুস প্রতিস্থাপন হওয়ার ১৫ দিন আগে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। বৃদ্ধার বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু ডাক্তাররা জানান, অসাধ্য সাধন হতে পারে। দুটি ফুসফুসই বদলে দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন করারই সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তাররা।

চিকিৎসকরা বলছেন, হৃদপিণ্ড, কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের থেকে অনেকটাই জটিল ফুসফুস প্রতিস্থাপন। প্রথমত ‘ব্রেন ডেথ’ ব্যক্তির ফুসফুস যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্রিন করিডর করে নিয়ে গিয়ে প্রতিস্থাপন করার দরকার পড়ে। হাতে সময় থাকে চার থেকে ছ’ঘণ্টা। প্রতিস্থাপনের জন্য পরিকাঠামো, হাসপাতালের সেটআপ এবং প্রতিস্থাপন পরবর্তী সময় রোগীর শরীরে যে ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি দরকার হয়। ভারতের হাসপাতালে এখন দুটি ফুসফুস বা বাইল্যাটারাল লাং ট্রান্সপ্লান্টের মতো পরিকাঠামো আছে। কাজেই রোগীদের এই জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য বিদেশে যাওয়ার দরকার পড়বে না।