ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কারণে যে সব নাবালিকারা পরিবার পরিত্যক্ত, তাদের খাবার, আশ্রয় এবং আইন সহায়তা দেওয়ার জন্য নতুন প্রকল্প আনতে চলেছে ভারতের কেন্দ্র সরকার। সোমবার ৩ জুলাই কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এ কথা ঘোষণা করেছেন।
স্মৃতি জানিয়েছেন, নির্ভয়া প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে চালু হওয়া এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, ধর্ষণের কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়া কিশোরীরা, যাদের নিজেদের রক্ষা করার কোনও ক্ষমতা নেই, তাদের আর্থিক এবং পরিকাঠামোগত সহায়তা দেবে কেন্দ্র।
এই প্রকল্পে মিশন বাৎসল্যের অধীনেই আরও কিছু অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হবে। বিষয়টি বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট শিশু সুরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হবে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি আরও জানিয়েছেন, ২০২১ সালে সূচনা হওয়া মিশন বাৎসল্য-র মূল লক্ষ্য হল শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া এবং তাদের ভাল থাকার বিষয়টি দেখভাল করা। যে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হবে, তার জন্য লাভবান হবেন নতুন স্কিমের অধীনে থাকা ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সের মেয়েরা। সন্তান জন্মের পরেও ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এই প্রকল্পে নিগৃহীতাদের আইনি সহায়তার দেওয়ার পাশাপাশি আদালতের শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য নিরাপদ পরিবহণও দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
স্মৃতি জানিয়েছেন, ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্থার ঘটনায় নিগৃহীতরা যাতে দ্রুত বিচার পায় তার জন্য দেশে ৪১৫টি পকসো ফাস্ট ট্র্যাক আদালত তৈরি করেছে সরকার। ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে পকসো আইনের অধীনে দেশজুড়ে ৫১ হাজার ৮৬৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার ৬৪ শতাংশ মামলাই পেনিট্রেটিভ অর্থাৎ যৌনাঙ্গ প্রবেশের ফলে হওয়া যৌন নির্যাতনের ঘটনা। এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে নিগৃহীতারা নয়া এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
সূত্রের খবর, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, একই ছাদের তলায় মা ও সন্তানকে শিক্ষা, পুলিশি ও আইনি সাহায্য, কাউন্সেলিং ও বিমা সহ বিভিন্ন দ্রুত, আপৎকালীন এবং অন্যান্য পরিষেবা দেওয়া। প্রসূতি, নবজাতক, এবং সদ্যোজাতের চিকিৎসাও করা হবে এই প্রকল্পের অধীনে।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনার জন্য দায়ের করা এফআইআর-এর কপি জমা দেওয়ার দরকার নেই। তবে যাঁরা এই স্কিমটি বাস্তবায়িত করবেন তাঁদের নিশ্চিত করতে হবে যে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে এবং এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই স্কিমের সুবিধাভোগীদের জন্য চাইল্ড কেয়ার হোমে আলাদা জায়গা বরাদ্দ করা হবে কারণ তার চাহিদা সেখানে বসবাসকারী অন্যান্য শিশুদের থেকে আলাদা হবে।
এছাড়া ধর্ষিতাদের যত্ন নেওয়ার জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগ করা হবে। মা ও শিশুর পরিচর্যার খরচ কেন্দ্রের তরফে পাঠিয়ে দেওয়া হবে হোমগুলিকে।