কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী যাচ্ছেন মণিপুর সফরে, অগ্নিগর্ভ রাজ্যে খুলতে চান ‘ভালবাসার দোকান’

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী

উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর গত মে মাসের শুরু থেকে জনজাতি দাঙ্গায় অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কয়েক দিন আগে গিয়েছিলেন সে রাজ্যের সফরে। কিন্তু তার পরেও অশান্তি থামেনি মণিপুরে।

জাতিদাঙ্গায় দীর্ণ মণিপুরে হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার পরিবার। এবার সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মণিপুর যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার ২৯ জুন মণিপুরে ত্রাণ শিবিরগুলিতে যাবেন রাহুল, কথা বলবেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে, এমনটাই সংবাদ সূত্রের খবর।

কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল এই খবর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২৯-৩০ জুন মণিপুর সফরে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধী। সেখানকার ত্রাণশিবিরগুলি পরিদর্শন করার পাশাপাশি ইম্ফল এবং চুড়াচাঁদপুরে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন "।

তিনি লেখেন, "গত প্রায় দু’মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর, উত্তর পূর্বের এই রাজ্যের মানুষের একটু স্বস্তির স্পর্শ খুব দরকার, যাতে করে সমাজ সংঘর্ষ থেকে শান্তির পথে আসতে পারে। আমাদের ভালবাসার শক্তি হয়ে উঠতে হবে, ঘৃণার নয়," দাবি তাঁর।

উল্লেখ্য, ভারত জোড়ো যাত্রার সময়েই রাহুল বলেছিলেন, তিনি ‘ঘৃণার বাজারে’ ‘ভালবাসার দোকান’ খুলছেন। তাঁর সেই বক্তব্যই এই মোদী বিরোধী প্রচারে কংগ্রেসের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

গত মে মাসেই চারদিনের জন্য মণিপুর সফরে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরেও উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে হিংসাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে কেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নীরব রয়েছেন, সেই নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহকে পদ থেকে সরানোর জন্যও দাবি তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে।

১০ জুন কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যপালের নেতৃত্বে মণিপুরে একটি শান্তি কমিটি গঠন করেছিল এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য এবং বিরোধী দল এবং গোষ্ঠীগুলির মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু করেছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে মণিপুরের গৃহহীন মানুষের জন্য কেন্দ্র ১০১.৭৫ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজও অনুমোদন করেছে কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত হয় গত ৩ মে, যখন মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষ তফসিলি উপজাতি হিসেবে তাদের অন্তর্ভুক্তিকরণের দাবিতে পার্বত্য এলাকাগুলিতে একটি উপজাতি সংহতি মার্চ করেছিল। অন্যদিকে সংরক্ষিত বনভূমি থেকে কুকি সম্প্রদায়ের মানুষকে উচ্ছেদ করা নিয়ে আগে থেকেই মণিপুর জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তির ঘটনা লেগেই ছিল। কিন্তু মেইতেইদের এই দাবির পরেই তার বিরোধিতায় পথে নামে কুকি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১২০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।