শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়ে অ্যামনেস্টির আহ্বান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত—পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়ে জাতিসংঘের কাছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আহ্বান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, “বিদেশিদের বিশ্বাস করবেন না, তারা সুন্দর সুন্দর কথা বলে একটা দেশকে ধংস করে দেয়। সিরিয়া, লিবিয়ার মতো দেশগুলো অনেক ভালো ছিল, কিন্তু বিদেশিদের কারণে সেগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে”।

মঙ্গলবার (২৭ জুন) দুপুরে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নে দরিদ্র মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আব্দুল মোমেন বলেন, এসব তাদের মনগড়া। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তারা এসব কথা বলছে। তারা চায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী না গেলে (বাংলাদেশ) সেনাবাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেবে।

আব্দুল মোমেন আরও বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী সদস্য নেয় অনেক যাচাই-বাছাই করে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে জানে।

নির্বাচন ঘিরে দেশি-বিদেশিদের ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেসব দেশ উন্নতি করে; সেসব দেশকে দাবিয়ে রাখতে কিছু দেশি- বিদেশি শক্তি কাজ করে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, বিদেশিরা চায় তাদের কাছে হাত পাতবে, সাহায্য নেবে; ফলে তারা তাদের ইচ্ছেমতো দেশকে পরিচালিত করবে।

তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তো ঠিক না।

সরকার স্থিতিশীল থাকলে দেশের উন্নতি হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি

উল্লেখ্য, এর আগে শুক্রবার (২৩ জুন) বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত কেউ যেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ তিন দশক ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সদস্যদের পাঠাচ্ছে। বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী পাঠায়, সেগুলোর একটি বাংলাদেশ। অতীতে বাংলাদেশের নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীগুলোর বিশেষ করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিবেচনায় নিলে বিষয়টি উদ্বেগের। র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনসহ বিভিন্ন খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিরোধী রাজনীতিক, মানবাধিকারকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী ও প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় তখন র‍্যাব গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার, মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের হুমকি, ভয় দেখানো ও হয়রানি শুরু করে বলে খবর রয়েছে। র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে জাতিসংঘের র‌্যাব সদস্যদের শান্তিরক্ষা মিশনে নেওয়া স্থগিত রাখা উচিত। যতক্ষণ পর্যন্ত মিশনে অংশগ্রহণকারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ততা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়, সে পর্যন্ত এটা স্থগিত রাখার পক্ষে অ্যামনেস্টি।