ভারতে বর্ষা: উত্তর ভারতের একাধিক অঞ্চলে ভারী বর্ষণ, ধস, হড়পা বানে জনজীবন বিপর্যস্ত; পশ্চিম ভারতের মুম্বই জলমগ্ন প্রবল বৃষ্টিতে

উত্তর ভারতের একাধিক অঞ্চলে ভারী বর্ষণ, ধস, হড়পা বানে জনজীবন বিপর্যস্ত; পশ্চিম ভারতের মুম্বই জলমগ্ন প্রবল বৃষ্টিতে।

উত্তর ভারতের দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ রাজ্যগুলিতে বেশ কিছুদিন আগেই বর্ষা ঢুকেছে। দেরিতে প্রবেশ করলেও শুরু হয়েছে বর্ষার আকাশভাঙা বৃষ্টি। রবিবার প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরাখন্ড, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, দিল্লি সহ একাধিক রাজ্যে।

এর ফলে উত্তরাখন্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার চার ধাম যাত্রায় মৃত্যু হয়েছে দুই পুণ্যার্থীর। তুমুল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশও। হড়পা বানে ভেসে গেছে অনেক এলাকা, ছ'জন মৃত, বৃষ্টি ও ধসে রাজ্যে আটকে অসংখ্য পর্যটক।

রবিবার ২৫ জুন প্রায় সারাদিনই মেঘলা ছিল আকাশ। সেই সঙ্গে তুমুল বর্ষণ সঙ্গী ছিল একাধিক রাজ্যে। বিশেষত দিল্লিতে বৃষ্টির পরিমাণ এতটাই বেশি যে তার জেরে একাধিক জায়গায় বিপর্যস্ত হয় জনজীবন। কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে দিল্লি সহ উত্তর ভারতের একাধিক জায়গায়।

পাশাপাশি, গুরুগ্রামে জলের তোড়ে ভেঙেছে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক। ৭৫এ নম্বর জাতীয় সড়ক ভাঙার ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ফরিদাবাদ, সোনহা এবং ভটিকা চকের মধ্যে। এই তিনটি অঞ্চলকে যুক্ত করে এই সড়কপথ। অন্যতম ব্যস্ত এই রাস্তা জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়ার ফলে ব্যহত হয়েছে যানচলাচল।

জানা গেছে, এই নিম্নচাপ সোমবারেও অব্যহত থাকবে। ফলে, বৃষ্টির পরিমাণ না কমায় আরও বাড়তে পারে ক্ষতির পরিমাণ। সব মিলিয়ে উত্তর ভারতের একাধিক অঞ্চল বিপন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে।

পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বইতেও বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। সেখানে মাত্র এক রাতের বৃষ্টিতেই ভেসে গেছে রাস্তাঘাট, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে, উপড়ে পড়েছে গাছ। শুধু তাই নয়, নর্দমার জলে পড়ে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হয়েছে দুই জনের। পুলিশ এসে পরে জল ছেঁচে তাঁদের দেহ উদ্ধার করেছে।

শনিবার ২৪ জুন রাতভর বৃষ্টি হয়েছে মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায়। তার জেরেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে একাধিক এলাকা। প্রবল বৃষ্টির জেরে গোবন্দির দুই ব্যক্তি পিছলে গিয়ে পড়েন নর্দমার জমা জলে। ডুবে মৃত্যু হয়েছে দুই জনেরই। পরে বৃষ্টি কমার পর দমকল এবং পুলিশ এসে জল ছেঁচে তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, মুম্বইয়ের চেম্বুরে সারাদিনে ৮০.০৪ লিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, ভিক্রোলিতে হয়েছে ৭৯.৭৬ মিলিমিটার, সিওনে ৬১.৯৮ মিলিমিটার, ঘাটকোপারে ৬১.৬৮ মিলিমিটার এবং মাতুঙ্গাতে বৃষ্টির পরিমাণ ৬১.২৫ মিলিমিটার। তাদের জারি করা একটি বিবৃতিতে বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন জানিয়েছে, এই বৃষ্টির কারণে ১১টি গাছ পড়ে গেছে। এছাড়াও শর্ট সার্কিটের সাতটি ঘটনার খবর মিলেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিতে আন্ধেরি সাবওয়ে জলে ডুবে গিয়েছিল, তার ফলে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল যানবাহন। এছাড়া মহালক্ষ্মী মন্দিরের আশেপাশের রাস্তা, বান্দ্রা-ওরলি সি-লিঙ্কের কাছে বেশ কিছু এলাকায় যানবাহন অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাচল করছিল। কুরলা, সান্তাক্রুজ এবং এসভি রোড এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল।