আগামী অর্থবছর (২০২৪) এর জুলাই-ডিসেম্বর পর্বের জন্য একটি মুদ্রানীতি (এমপিএস) ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিতে, সুদের হারের সীমা তুলে নেয়া হয়েছে। আর, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিময় হার স্থিতিশীল বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার রবিবার (১৮ জুন) বিকালে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মোঃ হাবিবুর রহমান সামষ্টিক অর্থনীতির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে নীতির ওপর আলোচনা করেন।
গভর্নর বলেন, “ বাংলাদেশ ব্যাংক, মূল্যস্ফীতির হার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নামিয়ে আনতে একটি বিনিয়োগ সহায়ক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। অর্থ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও খরচ কমাতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশেষে চলতি বছরের জুলাই থেকে পলিসি রেট (রেপো রেট) দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি, ঋণের সুদের হারের সীমা বর্তমান ৬শতাংশ তুলে নিয়েছে।”
আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, “যদিও এটি একটি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, তবুও, কেন্দ্রীয় ব্যাংক খাদ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে কৃষি ও গ্রামীণ ঋণের জন্য অর্থ প্রবাহ নিশ্চিত করবে।”
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে এবং চাহিদা কমাতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সাধারণত এই ব্যবস্থা গৃহীত হয়। নতুন নীতি অনুযায়ী, আমানতের ওপর ৬ শতাংশ এবং ঋণের (আমানত-ঋণ) ওপর ৯ শতাংশ সুদের হারের ক্যাপ শেষ হয়েছে। এটি একটি বাজার-চালিত স্মার্ট রেফারেন্স রেট দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে, যা গড় ট্রেজারি বিলের হার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
মুদ্রানীতিতে গৃহীত স্মার্ট রেট সূত্র অনুযায়ী, রেফারেন্স রেট গণনা করা হবে ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের চলমান গড় হার হিসাবে; ব্যাঙ্কগুলোর জন্য ৩ শতাংশ এবং ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫ শতাংশ মার্জিন-সহ।
বর্তমানে, ৬ মাসের ট্রেজারি বিলের হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। তাই ব্যাংক ঋণের জন্য সর্বোচ্চ ঋণের হার হবে ১০ শতাংশ বা এর কিছু বেশি। আর, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ১২ শতাংশ বা এর কিছু বেশি।
গভর্নর আবদুর রউফ বলেন, “ এই মুদ্রানীতি, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদের হারের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যা বাহ্যিক প্রভাবে তৈরি হয়েছিলো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “স্থিতিশীল বিনিময় হার এবং মানসম্মত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এই মুদ্রানীতির চ্যালেঞ্জ।”
মুদ্রানীতিতে, ২০২৩ অর্থবছরে ১৪ শতাংশ এবং ২০২৪ অর্থবছরে ১১ শতাংশ বেসরকারি খাতের ঋণ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করেছে। সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে মুদ্রানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।