সরকার কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবে না: কাদের—স্যাংশনে সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে: ফখরুল

মির্জা ফখরুল-ওবায়দুল কাদের

বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার কোনো চাপের কাছে মাথা নত করেনি, এখনো করবে না।

অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকার স্যাংশনে আওয়ামী লীগ সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে। লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারি না। আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারীর কারণে আমেরিকা থেকে স্যাংশন। কেন? তারা বলে আমরা ভয় পাই না। এখন এমন ভয় পেয়েছে হাঁটু কাপতে শুরু করেছে।

সরকার কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবে না—ওবায়দুল কাদের

বুধবার (১৪ জুন) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার কোনো চাপের কাছে মাথা নত করেনি, এখনো করবে না।

বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ যৌক্তিক বলে বিবেচিত হয় না। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার বিষয়টি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

বাংলাদেশে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কিছু ত্রুটির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা করছেন, আর নির্বাচন কমিশন স্বাধীন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির কতটা জনপ্রিয়তা আছে তা খতিয়ে দেখতে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।

তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে এবং তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাদ দিয়েছে, বিএনপির এই অভিযোগ দুটি মিথ্যা।

জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইসি এই দলের নিবন্ধন বাতিল করলেও বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের চিঠির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী কাজ করি?

স্যাংশনে আ.লীগ সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে—মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমেরিকার স্যাংশনে আওয়ামী লীগ সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে মন্তব্য করে বলেন, লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারি না। আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারীর কারণে আমেরিকা থেকে স্যাংশন। কেন? তারা বলে আমরা ভয় পাই না। এখন এমন ভয় পেয়েছে হাঁটু কাপতে শুরু করেছে।

বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়িতে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের চট্টগ্রাম বিভাগ আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন র‌্যাবকে কারা ব্যবহার করেছে, আমাদের ভাইদের তুলে নিয়ে গুম করে হত্যা করেছে?

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আর বিশ্বাস করা যায় না। নতুন বাংলাদেশ নতুন সরকার গঠন তরতে হবে। সকল মানুষকে এক করতে হবে সকল রাজনৈতিক দলকে এক করতে হবে, সবাইকে নিয়ে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। আমরা ক্ষমতার জন্য নয়, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন করছি। অচিরেই এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটি নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে, যে বাংলাদেশে আমার কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে, চাকরির ব্যবস্থা হবে, আমার ভোট আমি দিতে পারব, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে, আমার সন্তানের ভবিষ্যত তৈরি হবে, আমার শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে, আমার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। আমরা সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে নতুন কলকারখানা গড়ে উঠবে এবং মানুষের চাকরির নিশ্চয়তা থাকবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ তাদের রুটি রুজির নিশ্চয়তা পাবে। যেখানে শান্তি থাকবে ন্যায় বিচার থাকবে। বড়লোক আরও বড়লোক হবে না, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হবে না, একটি সাম্যের বাংলাদেশ তৈরি হবে। আমরা সবাই সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।

তিনি বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তরুণদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং সংগ্রাম করে লড়াই করে যুদ্ধ করে এদেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের টাকা দিয়ে নিজের উন্নয়ন করছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তারা ছাড়া আর কেউ লাভবান হচ্ছে না। আজকে আমাদের সকল অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আদালতে গিয়ে যে আমরা ন্যায়বিচার পাব, সেই ন্যায়বিচার থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। পার্লামেন্টকে শেষ করে দিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে। এই যে মেয়র নির্বাচন হয়েছে। বরিশাল, খুলনায় নির্বাচন হয়েছে। গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের মায়ের কাছে হেরে গেছে।

বরিশালে পীর সাহেব একজন আলেম মানুষ। তাঁকে সবাই শ্রদ্ধা করে। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও মেরে রক্তপাত ঘটিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।