বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের বৃহত্তর স্বার্থে, বহুপাক্ষিকতার প্রকৃত চেতনাকে সমুন্নত রাখার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সেমাবার জি-২০ উন্নয়ন মন্ত্রীদের সম্মেলনের (ডিএমএম) বিভিন্ন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেছন তিনি। এসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহবান জানান।
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের বার্তা অনুসারে, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর সামনে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ড. মোমন। আর, এর বাস্তবায়ন, অর্থায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সমর্থন দানের জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জি-২০ দেশগুলোর পাশাপাশি অতিথি দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী/মন্ত্রীরা এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে, প্রাথমিকভাবে বহুপাক্ষিকতা, এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং সবুজ উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসডিজি বাস্তবায়ন, গ্রিন ডেভেলপমেন্ট এবং ‘লাইফস্টাইল ফর এনভায়রনমেন্ট’ মিশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অর্জন তুলে ধরেন।তিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে জি-২০ উন্নয়ন মন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে, তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের বিষয় এবং আগামী দিনে ঘটতে পারে এমন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন।
জি-২০ বৈঠক সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বে বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের নেতৃত্বের জন্য, ভারতের প্রশংসা করেন আব্দুল মোমেন। উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন অর্জনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ মালিকি বিন উসমান এবং ইউএসএআইডির উপ-প্রশাসক ইসোবেল কোলম্যানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সিঙ্গাপুরের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে, ড. মোমেন, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি লোক নিয়োগের আহ্বান জানান।
ইউএসএআইডি’র উপ-প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ এবং ইউএসএআইডি-এরর মধ্যে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের কথা তুলে ধরেন। উভয় বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গাদের, তাদের স্বদেশে দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য সমর্থন কামনা করেন।
বারাণসীতে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মন্ত্রীদের এ সম্মেলনে অর্থনৈতিক মন্দা, ঋণ মন্দা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, দূষণ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ও অসমতা, খাদ্য ও জ্বালানির নিরাপত্তাহীনতা, বিশ্বব্যাপী সরবরাহ-শৃঙ্খল ব্যাঘাত, ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা, জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট প্রভৃতির কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।