ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তিন দেশে ছয়দিনের সফর শেষ করে বৃহস্পতিবার ২৫ মে ভোর ৬টার একটু আগে দেশে ফেরেন। ভোরবেলাই পালাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বুধবার গভীর রাত থেকেই বিজেপি সমর্থকেরা পালাম বিমানবন্দরের আশেপাশে জমা হতে শুরু করেন।
বুধবার বেশি রাতে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরের বাইরেই জমায়েতের আয়োজন করেছিল দিল্লি বিজেপি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর তিন দেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে বিরোধীদেরই বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, তিন দেশেই শাসক ও বিরোধী পক্ষ নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়েছেন।
মোদী বলেন, "আমি দেশের জন্য দীর্ঘ সময় ব্যয় করে এলাম। আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম, ভারতের কথা শুনতে ওই সব দেশে কী বিপুল আগ্রহ।" মোদীর কথায়, "গোলামির মানসিকতা ছেড়ে ভারত যে সাহসের সঙ্গে এগোচ্ছে এটাই বর্হিবিশ্বকে মুগ্ধ করছে।"
প্রধানমন্ত্রী ছয়দিনের সফরে প্রথমে গিয়েছিলেন জাপানের হিরোশিমায়। সেখান থেকে যান পাপুয়া নিউগিনি। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া হয়ে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, "অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয়দের আয়োজিত অনুষ্ঠানে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ এবং সমস্ত বিরোধী দলের নেতারা অংশ নিয়েছিলেন। এটাই সেখানে গণতন্ত্র। এই অনুষ্ঠানে শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষই ভারতের প্রতিনিধিকে সম্মান জানায়।"
রাজনৈতিক মহল মনে করছে সাতসকালে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে দেশের বিরোধীদের বার্তা দিতে চেয়েছেন। বলতে চেয়েছেন রাষ্ট্রের স্বার্থে ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠতে হয়।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে রবিবার ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান ২০টি বিরোধী দল বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে কেন প্রধানমন্ত্রী নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন এই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপি বিরোধীদের সিদ্ধান্তকে রাষ্ট্রের অবমাননা হিসাবেই দেখছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তাঁর দিল্লি-দেরাদুন বন্দেভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধন করার করেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধনের পর ভাষণ দেন।
বুধবার বিরোধীরা রবিবারের অনুষ্ঠান বয়কটের কথা ঘোষণার পর সরকারের তরফে জট ছাড়ানোর বিশেষ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, "অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সব দলকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। এবার সিদ্ধান্ত দলগুলিকে নিতে হবে।" সরকারের তরফে শুধু সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বিরোধীদের বয়কটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন।