ইস্যু নির্দিষ্ট। অবস্থানও স্পষ্ট। সেই অবস্থান নিতে গিয়ে কেউ কোনও ছুৎমার্গ রাখল না। ভারতে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের কথা ঘোষণা করে যৌথ বিবৃতি দিল ১৯টি দল। যার মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, আম আদমি পার্টি, শিবসেনা, এনসিপি।
সেখানে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, যেভাবে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে গুরুত্ব না দিয়ে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই করবেন বলে ঘোষণা করা হয়েছে তা শুধু অগণতান্ত্রিক নয়, চূড়ান্ত স্বৈরাচারী।
রাষ্ট্রপতিকে বাদ দিয়ে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন দেশের সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত বলেই মত ১৯টি দলের। আগামী ২৮ মে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন। বয়কট ঘোষণার পাশাপাশি তৃণমূল দাবি তুলেছে, রাষ্ট্রপতিকে দিয়েই সংসদ ভবনের উদ্বোধন করাতে হবে।
সংবিধানের ৮৫, ৮৬ এবং ৮৭ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে রাষ্ট্রপতি সংসদের অধিবেশন ডাকবেন, মুলতবি করবেন এবং লোকসভা ভেঙে দিতেও পারবেন। এছাড়া সংসদের যে কোনও সভা বা যৌথ সভার অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে পারবেন। তাঁর অনুমতি ছাড়া বিল, অধ্যাদেশ আইনি স্বীকৃতি পায় না। রাষ্ট্রপতিকে বাদ দিয়ে তাই নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অসাংবিধানিক বলে মত বিরোধীদের।
কোভিডের সময়েই নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস করেছিলেন মোদী। সেইসময়েও একপ্রস্ত সমালোচনা হয়েছিল। দেশের আর্থিক অধোগতির মধ্যে এই বিলাসিতা কেন সেই প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু নির্মাণ শেষ হওয়ার পর যেভাবে প্রধানমন্ত্রীই তার উদ্বোধন করতে চলেছেন তারই সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি।
ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর নামে স্টেডিয়ামের নামকরণ হয়েছে গুজরাতের আমদাবাদে। সেই স্টেডিয়ামে আগামী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ ও ফাইনাল খেলা হবে। তারপর নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনও তাঁর হাতে করার সিদ্ধান্তকে বিরোধীরা বলেছেন, এর চেয়ে বড় স্বৈরাচার, আত্মম্ভরিতা আর কিছু হয় না। তবে নির্দিষ্ট ইস্যুতে ১৯টি দলের এক জায়গায় আসা জাতীয় রাজনীতির আগামীর জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বিজেপির অবশ্য বক্তব্য অতীতে ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধী সংসদের নয়া নির্মাণের উদ্বোধন করেছেন। ১৯৭৫ – এ ইন্দিরা উদ্বোধন করেন সংসদের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের। ১৯৮৭ তে রাজীব উদ্বোধন করেন সংসদের নতুন লাইব্রেরির। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরীর বক্তব্য, "কংগ্রেস কী করে প্রধানমন্ত্রী মোদীর দিকে আঙুল তোলে!"