ভারতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক হয় পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক দপ্তর নবান্নে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে বলেন, "দিল্লি সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিতে কেন্দ্রীয় সরকার যে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে তা রাজ্যসভায় আটকে দেব।" তিনি আরও বলেন, ২০২৪-এর আগে সেটাই হবে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেমিফাইনাল। সেই সঙ্গে অবিজেপি সব দলকে এক ছাতার তলার আসার আহ্বান জানান মমতা।
বৈঠকে বাংলা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবত মান এবং দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী আতিশী মার্লেনা , সাংসদ রাঘব চাড্ডা এবং সঞ্জয় সিং উপস্থিত ছিলেন।
কেজরিওয়াল বলেন, উপরাজ্যপালদের দিয়ে শুধু দিল্লি সরকারকে নয়, কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশে অবিজেপি সরকারগুলিকে রাজ্যপালদের দিয়ে হেনস্থা করছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বিজেপি বিধায়ক কিনে, ইডি, সিবিআইকে দিয়ে সরকার ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখল করছে। কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায় পর্যন্ত মানছে না।"
প্রসঙ্গত, দিল্লি সরকারের হাত থেকে অফিসারদের ট্রান্সফার পোস্টিংয়ের অধিকার নিজের হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় উল্টে দিতে গত শনিবার রাতে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই অর্ডিন্যান্স যাতে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে বিল এলে আইনে পরিণত করতে না পারে সে জন্য উদ্যোগী হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা কেজরিওয়াল। তিনি চাইছেন রাজ্যসভায় বিলটি আটকে দিতে।
পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, লোকসভায় বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। কিন্তু রাজ্যসভায় শাসক জোট এখনও সংখ্যালঘু। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজ্যসভায় বিলটি আটকে দিতে বিরোধী জোট গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর কেজরিওয়ালের মুম্বইয়ে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার এবং শিবসেনার উদ্ধব-বালাসাহেব গোষ্ঠীর নেতা উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠক করার কথা। তারপর যাবেন তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে। তিনি যোগাযোগ রাখছেন সব বিরোধী নেতার সঙ্গেই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এটা শুধু দিল্লির সরকারের লড়াই নয়। গোাটা দেশের মানুষের লড়াই।"