আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা, আইইএ বুধবার বলেছে, তারা আশংকা করছে, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো থেকে কার্বন নির্গমন এই বছর আবারো বাড়বে। তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানী এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালের তুলনায় নির্গমন অনেক কম হবে।
২০২০ সালে করোনভাইরাস মহামারী দ্বারা সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পর, গত বছর বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য প্রধানত দায়ী গ্রীনহাউজ গ্যাস, কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের একটি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন দেখা গিয়েছিল।
প্যারিস-ভিত্তিক সংস্থা আইইএ বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২০২২ সালে প্রায় এক শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এটি ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় ৩০ কোটি মেট্রিক টন বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড। ওই বছর গ্যাস, তেল এবং কয়লা পোড়ানোর ফলে প্রায় ৩,৩৫০ কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়েছিল৷
সংস্থাটি বলছে, যদিও কয়লা নির্গমন ২% বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ যে দেশগুলি আগে রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করেছিল, তারা অন্যান্য বিকল্প জ্বালানীর উত্সগুলির দিকে ঝুঁকেছে। তবে এটি সৌর এবং বায়ু শক্তির সম্প্রসারণের চেয়ে বেশি ছিল না, যাতে ২০২২ সালে রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।
মহামারী-সম্পর্কিত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার সাথে সাথে তেলের ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলস্বরূপ আরও বেশি লোক কাজের জন্য যাতায়াত করছে এবং বিমান ভ্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইইএ বলছে, "এই বছর বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ অনেক বাড়বে। যা প্রায় ১০০ কোটি টনের কাছাকাছি পৌঁছানোর জন্য তিনগুণ বেশি হবে - যদি না এটি বিশ্বজুড়ে নবায়ণযোগ্য জ্বালানী প্রযুক্তির প্রধান স্থাপনা এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য হয়।"
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সম্মত উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস (২.৭ ফারেনহাইট) এর বেশি বৃদ্ধি থেকে বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে আটকাতে, আগামী দশকগুলিতে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রীনহাউজ গ্যাসের নির্গমনকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করতে হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৌশলের জন্য খুব কম জায়গা বাকি আছে। কারণ শিল্প কারখানা বৃদ্ধি পাবার পর, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ইতোমধ্যে প্রায় ১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস (২.২ ফারেনহাইট) বেড়েছে।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা চিন্তক গোষ্ঠী ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশগুলির নির্গমন হ্রাসের বর্তমান পরিকল্পনাগুলি ২০১৯ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে মাত্র ৭% হ্রাস পাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য পূরণের জন্য, সেই সময়ের মধ্যে নির্গমন ৪৩% হ্রাস করতে হবে।
মিশরে আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে নির্গমন কমাতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা বাড়ানোর ব্যাপারটি একটি আলোচ্য বিষয় হবে।