উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন আবারও সতর্ক করেছেন যে, যদি হুমকি দেওয়া হয়, তবে উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। তিনি এই সপ্তাহে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের জন্য তার শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন।
কিম তার পরমাণু সমৃদ্ধ সশস্ত্র সামরিক উন্নয়ন চালিয়ে যাওয়ার জন্য “দৃঢ় ইচ্ছা” ব্যক্ত করেছেন, যাতে দেশটি “প্রয়োজনে প্রতিকূল শক্তির কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান পরমাণু হুমকিসহ সমস্ত বিপজ্জনক প্রচেষ্টা এবং হুমকি প্রতিহত ও নস্যাৎ করতে পারে”, উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি শনিবার (৩০ এপ্রিল) এ কথা জানিয়েছে।
কেসিএনএ বলেছে যে, কিম সোমবারের কুচকাওয়াজের সময় তার সামরিক কর্মকর্তাদের তাদের কাজের প্রশংসা করার জন্য ডাকেন। ওই কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু অস্ত্রাগারের সবচেয়ে বৃহৎ অস্ত্র প্রদর্শন করে। যার মধ্যে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যা আপাতদৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম। উত্তর কোরিয়া স্থল যানবাহন বা সাবমেরিন থেকে ছোড়ার জন্য নকশাকৃত বিভিন্ন স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও তৈরি করেছে। যা দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকিস্বরূপ।
কবে সামরিক কর্তাদের সঙ্গে কিমের বৈঠক হয়েছে তা জানায়নি কেসিএনএ।
সামরিক বর্ষপূর্তি
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর ৯০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই কুচকাওয়াজটির আয়োজন করা হয়। কিমের পরমাণু শক্তি পুনরুজ্জীবিত করার উদ্দেশ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতিদানে এবং কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো অপসারণ করতে বাধ্য করা।
কুচকাওয়াজের জন্য জড়ো হওয়া হাজার হাজার সেনা এবং দর্শকদের উদ্দেশে বক্তৃতায় কিম “দ্রুততম গতিতে” তার পরমাণু বাহিনীকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং উস্কানি দিলে সেগুলো ব্যবহার করারও হুমকি দেন। তিনি বলেন, যেসব পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া তার “মৌলিক স্বার্থের” জন্য বাহ্যিক হুমকির মুখোমুখি হবে, সেখানে পরমাণু অস্ত্রগুলো “কখনো একমাত্র যুদ্ধ প্রতিরোধের মিশনে সীমাবদ্ধ থাকবে না”।
কিমের মন্তব্যের অর্থ হলো, তিনি ওয়াশিংটন ও সিউলের উপর চাপ বাড়াতে অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাবেন।
অস্ত্রাগার সম্প্রসারণ
যদিও কিমের ভূমিভিত্তিক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) সংগ্রহ আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। উত্তর কোরিয়া ২০১৯ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে হুমকির জন্য স্বল্পপাল্লার কঠিন-জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্রের অস্ত্রাগারও প্রসারিত করছে।
উত্তর কোরিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে কয়েকটিকে “কৌশলগত” অস্ত্র হিসেবে বর্ণনা করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সেগুলোর মাধ্যমে ছোট যুদ্ধক্ষেত্রে পরমাণু বোমা উৎক্ষেপণের আশঙ্কা রয়েছে এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী বাহিনীকে ধরাশায়ী করতে যুদ্ধের সময় সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করা হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৮ হাজার ৫০০ সেনা অবস্থান করছে।