"পড়াশোনা না হিজাব--যে কোনও একটিকে বেছে নিতে বলা হচ্ছে। কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি!" হিজাব বিতর্কে মুখ খুললেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই।
মেয়েদের হিজাব পরে স্কুল-কলেজে আসা নিয়ে বিক্ষোভ চলছে কর্নাটকে। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরিতেও। বিতর্ক গড়িয়েছে আদালত অবধি। ক্ষোভের আগুন বেড়েই চলেছে। মেয়েদের হিজাব পরে স্কুলে আসা উচিত কিনা সে নিয়ে একের পর এক মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্যে সরগরম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াও। হিজাব বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন পাক-ভূমিকন্যা নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। মুসলিম নারীদের শিক্ষা, স্বাধীনতা নিয়ে তিনি বরাবরই সরব। টুইট করে মালালা বলেছেন, "কলেজগুলি মুসলিম ছাত্রীদের পড়াশোনা আর হিজাবের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলছে। হিজাব পরে এলে ক্লাসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ভয়ানক ঘটনা ঘটছে। বিক্ষোভ জারি রেখেছেন মুসলিম মেয়েরা।" এর পরেই ভারতীয় রাজনীতিকদের উদ্দেশে মালালার বক্তব্য, "মুসলিম মেয়েদের কোণঠাসা করা বন্ধ করুন।"
১৩ বছর বয়সে তালিবান জঙ্গিদের গুলি লেগেছিল মালালার শরীরে। অপরাধ ছিল, মেয়ে হয়ে স্কুলে যাওয়ার। টানা ৪৯ দিনের যুদ্ধে মৃত্যুকে হারিয়ে জীবনের ছন্দে ফিরেছিলেন মালালা। সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। তালিবানের হুমকির বিরুদ্ধে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার ছিল তাঁর। মেয়েদের শিক্ষা, স্বাধিকারের দাবি নিয়ে মালালা লড়াই করছেন। হিজাব বিতর্কে তাঁর বক্তব্য, শুধুমাত্র পোশাকের জন্য মুসলিম মেয়েদের পড়াশোনা থমকে গেলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা হবে।
কর্নাটকের সীমানা পেরিয়ে হিজাব বিতর্ক চলছে মধ্যপ্রদেশ ও পুদুচেরিতেও। স্কুল-কলেজে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করতে অভিন্ন পোশাক বিধির কথা বলেছেন মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিং পারমার। পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয় তাই দেবাঙ্গিরি, শিমোগা, বাগালকোটের মতো উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। স্কুল, কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে সায় দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রীও। তাঁর বক্তব্য, সমস্ত স্কুল ও কলেজে অভিন্ন পোশাক বিধি থাকা দরকার। একই রকম ইউনিফর্ম পরবেন পড়ুয়ারা। তাহলেই বিতর্কের জায়গা থাকবে না। মধ্যপ্রদেশের কয়েকটি সরকারি স্কুলেও হিজাব নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পড়ুয়াদের অভিযোগ, হিজাব পরে ক্লাস করতে দিচ্ছেন না শিক্ষকরা। হিজাব পরাকে মৌলিক অধিকারের মধ্যে নিয়ে আসার দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মুসলিম ছাত্রীরা।